প্যাথলজি- ২০২২
তৃতীয় বর্ষ। বিষয় কোড- ৩০৬ সময়- ৩ ঘন্টা পূর্ণমান- ৭৫ [দ্রষ্টব্য: সকল প্রশ্নের মান সমান। যে কোন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দাও।]
১। (ক) স্টেরিলাইজেশন কাকে বলে? ইহার পদ্ধতিগুলো বর্ণনা কর।
(খ) স্টেরিলাইজেশন ও ডিসইনফেকশনের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
(গ) রক্ত পরিসঞ্চালনের বিপত্তিসমূহ কি কি?
উওর :
১। (ক) স্টেরিলাইজেশন কাকে বলে? ইহার পদ্ধতিগুলো বর্ণনা কর।
✅ স্টেরিলাইজেশন:
স্টেরিলাইজেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সকল প্রকার জীবাণু (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, স্পোর ইত্যাদি) সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়।
এটি প্রধানত অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি, সিরিঞ্জ, ড্রেসিং সামগ্রী ইত্যাদিকে জীবাণুমুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
✅ স্টেরিলাইজেশনের পদ্ধতি:
১. Physical Methods (ভৌত পদ্ধতি):
🔸 Dry Heat (শুষ্ক তাপ):
Hot air oven (১৬০° C তাপমাত্রায় ১ ঘন্টা)
ব্যবহৃত হয়: গ্লাস, ধাতব যন্ত্রপাতি ইত্যাদি।
🔸 Moist Heat (আর্দ্র তাপ):
Autoclave (১২১° C তাপমাত্রায় ১৫ পিএসআই চাপে ১৫-২০ মিনিট)
ব্যবহৃত হয়: গজ, সুতো, গ্লাভস ইত্যাদি।
🔸 Radiation (রেডিয়েশন):
Gamma rays, UV rays
ব্যবহৃত হয়: সিরিঞ্জ, ইনফিউশন সেট, ওষুধের প্যাকেট।
🔸 Filtration (পরিস্রবণ):
তরল বা গ্যাসের স্টেরিলাইজেশনে ব্যবহৃত হয়।
২. Chemical Methods (রাসায়নিক পদ্ধতি):
🔸 Ethylene oxide gas
🔸 Formaldehyde vapor
🔸 Hydrogen peroxide plasma
ব্যবহৃত হয়: তাপ সহ্য করতে না পারা জিনিসে।
১। (খ) স্টেরিলাইজেশন ও ডিসইনফেকশনের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
বিষয় স্টেরিলাইজেশন ডিসইনফেকশন
সংজ্ঞা সকল জীবাণু সম্পূর্ণ ধ্বংস অধিকাংশ প্যাথোজেন ধ্বংস
জীবাণু ধ্বংস ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, স্পোরসহ সকল জীবাণু স্পোর ব্যতীত জীবাণু
ব্যবহার অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি ত্বক, টেবিল, থার্মোমিটার ইত্যাদি
মাধ্যম তাপ, গ্যাস, রেডিয়েশন রাসায়নিক (অ্যালকোহল, ফেনল, ক্লোরিন)
সম্পূর্ণতা সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত আংশিক জীবাণুমুক্ত
১। (গ) রক্ত পরিসঞ্চালনের বিপত্তিসমূহ কি কি?।
(Complications of Blood Transfusion):
✅ ১. হিমোলাইটিক রিঅ্যাকশন (Hemolytic Reaction):
ভুল ব্লাড গ্রুপ দিলে RBC ধ্বংস হয়।
জ্বর, কাঁপুনি, হিমোগ্লোবিনিউরিয়া দেখা দেয়।
✅ ২. অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন (Allergic Reaction):
চুলকানি, র্যাশ, অ্যানাফাইল্যাক্সিস হতে পারে।
✅ ৩. ফিভার (Febrile Reaction):
রিসিপিয়েন্টের WBC এর প্রতিক্রিয়ায় জ্বর।
✅ ৪. সংক্রমণ (Infections):
সংক্রমিত রক্তে HIV, Hepatitis B/C, Syphilis ছড়াতে পারে।
✅ ৫. আয়রন ওভারলোড (Iron Overload):
ঘন ঘন রক্ত দিলে শরীরে অতিরিক্ত আয়রন জমে যায়।
✅ ৬. GVHD (Graft Versus Host Disease):
ইমিউনোকম্প্রোমাইজড রোগীর মধ্যে ঘটে।
✅ ৭. হাইপোথার্মিয়া ও হাইপারকেলেমিয়া:
সংরক্ষিত রক্ত দ্রুত দিলে তাপমাত্রা কমে যায় বা পটাশিয়াম বেড়ে যায়।
=======
২। (ক) ইমিউনিটি সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ লিখ।
(খ) একটিভ ও প্যাসিভ ইমিউনিটির মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ কর।
(গ) ইমিউনিটিতে অংশগ্রহণকারী কোষসমূহের নাম ও বৈশিষ্ট্য লিখ।
উওর :
২। (ক) ইমিউনিটি সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ লিখ।
✅ সংজ্ঞা:
ইমিউনিটি হলো দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে দেহ বিভিন্ন ক্ষতিকর অণুজীব (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, টক্সিন ইত্যাদি) থেকে নিজেকে রক্ষা করে।
✅ ইমিউনিটির প্রকারভেদ:
🔶 ১. প্রাকৃতিক (Innate) ইমিউনিটি:
জন্মগতভাবে পাওয়া।অ-নির্দিষ্ট (Non-specific)।ত্বরিত প্রতিক্রিয়া।উদাহরণ: চামড়া, পাকস্থলির অ্যাসিড, ফ্যাগোসাইটিক কোষ।
🔶 ২. অর্জিত (Acquired) ইমিউনিটি:
জীবনের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত।নির্দিষ্ট (Specific)।ধীরে প্রতিক্রিয়া করে, কিন্তু স্মৃতি তৈরি করে।
➡️ অর্জিত ইমিউনিটির আবার দুই ধরনের হতে পারে:
🔸 Active Immunity (সক্রিয়)
🔸 Passive Immunity (নিষ্ক্রিয়)
২। (খ) একটিভ ও প্যাসিভ ইমিউনিটির মধ্যে পার্থক্য লিখ।
বিষয় একটিভ ইমিউনিটি প্যাসিভ ইমিউনিটি
সংজ্ঞা নিজ দেহ অ্যান্টিবডি তৈরি করে। প্রস্তুত অ্যান্টিবডি সরবরাহ করা হয়
উৎস ভ্যাকসিন বা সংক্রমণ। সেরাম বা মায়ের দুধ
কার্যকারিতা শুরু ধীরে শুরু হয়। দ্রুত কাজ করে
স্থায়িত্ব দীর্ঘমেয়াদী। স্বল্পমেয়াদী
স্মৃতিকোষ সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় না
উদাহরণ BCG, MMR টিকা। Tetatnus Ig, মাতৃদুগ্ধ
২। (গ) ইমিউনিটিতে অংশগ্রহণকারী কোষসমূহের নাম ও বৈশিষ্ট্য লিখ:
✅ ১. লিম্ফোসাইট (Lymphocytes):
🔸 দুই ধরনের –B lymphocytes (B-cells):অ্যান্টিবডি তৈরি করে (Humoral Immunity)।
T lymphocytes (T-cells):
সেল-মিডিয়েটেড ইমিউনিটি প্রদান করে।
Subtypes:
Helper T-cells (CD4+) – অন্য কোষকে সক্রিয় করে।Cytotoxic T-cells (CD8+) – আক্রান্ত কোষ ধ্বংস করে।
✅ ২. ম্যাক্রোফেজ (Macrophage):
ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসকে গ্রাস করে (Phagocytosis)।অ্যান্টিজেন উপস্থাপন করে।
✅ ৩. নিউট্রোফিল (Neutrophils):
সংক্রমণের প্রথম প্রতিক্রিয়া দেয়।ফ্যাগোসাইটোসিসে দক্ষ।
✅ ৪. ডেনড্রাইটিক সেল (Dendritic cells):
অ্যান্টিজেন উপস্থাপন করে।T-cell অ্যাকটিভেশনে গুরুত্বপূর্ণ।
✅ ৫. ন্যাচারাল কিলার (NK) সেল:
======ভাইরাস আক্রান্ত ও ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করে।ইনেট ইমিউনিটির অংশ।
৩। (ক) প্যারাসাইটের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ লিখ।
(খ) ম্যালেরিয়া প্যারাসাইটের জীবনচক্র বর্ণনা কর।
(গ) বৈজ্ঞানিক নামসহ পাঁচটি কৃমির নাম লিখ।
উওর :
৩। ক) প্যারাসাইটের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ লিখ।
প্যারাসাইটের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Parasites) উদাহরণসহ:
১. শারীরিক গঠন অনুযায়ী (Morphological classification):
প্রোটোজোয়া (Protozoa): এককোষী অণুজীব।
উদাহরণ: Entamoeba histolytica, Plasmodium vivax
হেলমিনথ (Helminths): বহুকোষী কৃমি।
উদাহরণ: Ascaris lumbricoides, Taenia solium
আর্থ্রোপোড (Arthropods): বহুচ্যাপ্টা দেহবিশিষ্ট পরজীবী।
উদাহরণ: Pediculus humanus (উকুন), Sarcoptes scabiei (চুলকানির পোকা)
২. অবস্থান অনুযায়ী (According to habitat):
এন্ডোপ্যারাসাইট (Endoparasite): দেহের অভ্যন্তরে বসবাসকারী।উদাহরণ: Ascaris lumbricoidesএক্টোপ্যারাসাইট (Ectoparasite): দেহের বাহিরে বসবাসকারী।উদাহরণ: Lice, Mite
৩. নির্ভরশীলতার ধরন অনুযায়ী (According to dependency):
অব্লিগেট প্যারাসাইট: সর্বদা পরজীবী হয়।উদাহরণ: Plasmodiumফ্যাকালটেটিভ প্যারাসাইট: সুযোগ পেলেই পরজীবী হয়।উদাহরণ: Naegleria fowleri।
---
৩। খ) ম্যালেরিয়া প্যারাসাইটের জীবনচক্র বর্ণনা কর।
উওর : ম্যালেরিয়া প্যারাসাইটের জীবনচক্র (Life Cycle of Plasmodium spp.):
১. হোস্ট (Host):
Primary host: স্ত্রী Anopheles মশাSecondary host: মানুষ
২. মশার দেহে (In mosquito):
গ্যামেটোসাইট মশার অন্ত্রে যায়।ফার্টিলাইজেশন হয়ে জাইগোট হয়।ওসিস্টে পরিণত হয়ে স্পোরোজোয়াইট তৈরি হয়।স্পোরোজোয়াইট লালা গ্রন্থিতে যায়।
৩. মানুষের দেহে (In human):
মশার কামড়ে স্পোরোজোয়াইট রক্তে প্রবেশ করে।যকৃতে (liver) পৌঁছে মেরোজোয়াইটে পরিণত হয়।মেরোজোয়াইট RBC-তে ঢুকে ট্রফোজোয়াইট হয়।পুনরায় মেরোজোয়াইট তৈরি করে RBC ভেঙে বের হয়।কিছু মেরোজোয়াইট গ্যামেটোসাইটে রূপান্তরিত হয়।
৪. লক্ষণ দেখা দেয়:
জ্বর, কম্পন, ঘামহেমোলাইসিস, অ্যানিমিয়া।
---
৩। (গ) বৈজ্ঞানিক নামসহ পাঁচটি কৃমির নাম লিখ।
উওর : বৈজ্ঞানিক নামসহ পাঁচটি কৃমির নাম:
ক্রম সাধারণ নাম বৈজ্ঞানিক নাম
১ গোল কৃমি Ascaris lumbricoides
২ সূতা কৃমি Enterobius vermicularis
৩ ফিতাকৃমি Taenia solium
৪ হুক কৃমি Ancylostoma duodenale
৫ ফাইলেরিয়া কৃমি Wuchereria bancrofti
====
৪। (ক) নিউমোকক্কাস এর মরফলজি ও কালচারাল বৈশিষ্ট্য লিখ।
(খ) স্ট্রেপটোকক্কাস এর এনজাইম ও টক্সিনসমূহ কি কি?
(গ) স্ট্যাফাইলোকক্কাস এর প্যাথোজেনেসিটি লিখ।
৪। (ক) নিউমোকক্কাস এর মরফলজি ও কালচারাল বৈশিষ্ট্য লিখ।
উওর : নিউমোকক্কাস (Streptococcus pneumoniae) এর মরফোলজি ও কালচারাল বৈশিষ্ট্য হল:
❖ মরফোলজি (Morphology):
1. গ্রাম-পজিটিভ ডিপ্লোকক্কাই (Gram-positive diplococci)।2. জোড়া অবস্থায় থাকে; ল্যান্সেট (spearhead)-আকৃতির।3. অনাকর্ষক (non-motile)।4. ক্যাপসুলযুক্ত (Encapsulated) – যা ভারুলেন্স বাড়ায়।5. স্পোর (spore) ও ফ্ল্যাজেলা (flagella) নেই।
❖ কালচারাল বৈশিষ্ট্য (Cultural Characteristics):
1. অ্যানেরোবিক অবস্থায় বৃদ্ধি পায় (Facultative anaerobe)।2. Blood agar মিডিয়ায় α-হিমোলাইসিস (greenish discoloration) সৃষ্টি করে।3. Growth at 37°C, pH 7.6 এ ভালো হয়।4. Bile soluble।5. Optochin sensitive – পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়।
---
৪। (খ) স্ট্রেপটোকক্কাস এর এনজাইম ও টক্সিনসমূহ কি কি।
উওর : স্ট্রেপটোকক্কাস (Streptococcus) এর এনজাইম ও টক্সিনসমূহ হল:
❖ এনজাইম (Enzymes):
1. Streptokinase – ফাইব্রিন দ্রবীভূত করে, সংক্রমণ ছড়িয়ে দেয়।2. Streptodornase (DNase) – মৃত কোষের DNA ভেঙে দেয়।3. Hyaluronidase – টিস্যুতে অনুপ্রবেশ সহজ করে।4. Protease – প্রোটিন ভেঙে দেয়।
❖ টক্সিন (Toxins):
1. Streptolysin O – RBC ধ্বংস করে; অ্যানারোবিকে কাজ করে।2. Streptolysin S – RBC ধ্বংস করে; অ্যানারোবিক ও অ্যারোবিকে কাজ করে।3. Erythrogenic toxin – স্কারলেট ফিভার রোগ সৃষ্টি করে।4. Leukocidin – WBC ধ্বংস করে।
---
৪। (গ) স্ট্যাফাইলোকক্কাস এর প্যাথোজেনেসিটি লিখ।
উওর : স্ট্যাফাইলোকক্কাস (Staphylococcus aureus) এর প্যাথোজেনিসিটি (Pathogenicity) হল:
❖ ইনফেকশন/রোগ সৃষ্টির ধরন:
1. Local infections:
Furuncle (ফোড়া), Carbuncle, Impetigo
2. Systemic infections:
Septicemia, Pneumonia, Endocarditis
3. Toxin-mediated diseases:
Food poisoning – EnterotoxinToxic shock syndrome – TSST-1Scalded skin syndrome – Exfoliative toxin
❖ প্যাথোজেনিসিটিতে ভূমিকা রাখা উপাদানসমূহ:
1. Capsule – ফ্যাগোসাইটোসিস থেকে রক্ষা করে।
2. Protein A – IgG-র Fc অংশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইমিউন প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করে।
3. Coagulase enzyme – ফাইব্রিন জমিয়ে সংক্রমণের জায়গা তৈরি করে।
4. Hemolysins & Leukocidins – রক্তকণিকা ধ্বংস করে।
5. Exotoxins – বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে।
=======
৫। (ক) জীবাণুর নামসহ পাঁচটি যৌনবাহিত রোগের নাম লিখ।
(খ) এক্সোটক্সিন ও এন্ডোটক্সিন এর মধ্যে পার্থক্য লিখ।
'(গ) চিত্রসহ এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা এর জীবনচক্র বর্ণনা কর।
৫। (ক) জীবাণুর নামসহ পাঁচটি যৌনবাহিত রোগের নাম লিখ।
উওর : জীবাণুর নামসহ পাঁচটি যৌনবাহিত রোগের নাম হল:
ক্রম রোগের নাম জীবাণুর নাম
১ সিফিলিস (Syphilis) Treponema pallidum
২ গনোরিয়া (Gonorrhoea) Neisseria gonorrhoeae
৩ ক্ল্যামাইডিয়া ইনফেকশন Chlamydia trachomatis
৪ ট্রাইকোমোনিয়াসিস Trichomonas vaginalis (protozoa)
৫ এইডস (AIDS) Human Immunodeficiency Virus (HIV)
---
৫। (খ) এক্সোটক্সিন ও এন্ডোটক্সিন এর মধ্যে পার্থক্য লিখ।
উওর : এক্সোটক্সিন ও এন্ডোটক্সিন এর মধ্যে পার্থক্য হল: (Difference between Exotoxin & Endotoxin):
বৈশিষ্ট্য এক্সোটক্সিন (Exotoxin) এন্ডোটক্সিন (Endotoxin)
১. উৎপত্তি জীবন্ত গ্রাম-পজিটিভ ও কিছু গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া কেবলমাত্র গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর থেকে।
২.রাসায়নিক গঠন প্রোটিন লিপোপলিস্যাকারাইড (LPS)
৩. নিঃসরণ ব্যাকটেরিয়ার কোষ থেকে সক্রিয়ভাবে নিঃসৃত হয় ব্যাকটেরিয়া মারা গেলে মুক্ত হয়
৪. তাপ সহনশীলতা তাপ সংবেদনশীল (Heat labile) তাপ সহনশীল (Heat stable)
৫. টক্সিসিটি অত্যন্ত বিষাক্ত অপেক্ষাকৃত কম বিষাক্ত
৬. টক্সয়েড তৈরি হ্যাঁ – টক্সয়েড তৈরি করে টিকা বানানো যায় না – টক্সয়েড তৈরি হয় না
৭. উদাহরণ ডিপথেরিয়া টক্সিন, টিটানাস টক্সিন E. coli, Salmonella endotoxin।
---
৫। (গ) চিত্রসহ এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা এর জীবনচক্র বর্ণনা কর।
উওর : চিত্রসহ Entamoeba histolytica এর জীবনচক্র হল:
❖ জীবনচক্রের ধাপসমূহ:
1. Infective Stage – Cyst:
Fully developed quadrinucleate cyst খাদ্যের মাধ্যমে মুখে প্রবেশ করে।
2. Excystation (উদ্গম):
ক্ষুদ্রান্ত্রে সিস্ট ভেঙে ট্রফোজোয়াইটে পরিণত হয়।
3. Trophozoite Stage (Active stage):
বৃহদান্ত্রে থাকে, মিউকোসা ধ্বংস করে
ডিসেন্ট্রি ও আলসার সৃষ্টি করে
রক্তের মাধ্যমে লিভারে যেতে পারে → অ্যামেবিক লিভার অ্যাবসেস
4. Encystation (সিস্ট গঠন):
বৃহদান্ত্রে আবার সিস্টে পরিণত হয়
পায়খানার মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বের হয়
5. Transmission:
দূষিত পানি, খাবার বা হাতের মাধ্যমে অন্য মানুষের শরীরে ছড়ায়
❖ জীবনচক্রের চিত্র:
🧬 (পরীক্ষার খাতায় এই চিত্র অঙ্কন করতে হবে – নিচে ধারণা দেওয়া হলো)
[Cyst (mouth) → Small intestine (excystation) → Trophozoite (colon invasion) → Encystation → Cyst (feces)
=========
৬। (ক) ডিপথেরিয়ার জীবাণুর নাম ও ইহার মরফলজি লিখ।
(খ) হুকওয়ার্মের জীবনচক্র বর্ণনা কর।
(গ) আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়ার কারণ ও ইনভেস্টিগেশন লিখ।
৬। (ক) ডিপথেরিয়ার জীবাণুর নাম ও ইহার মরফলজি লিখ।
উওর : ডিপথেরিয়ার জীবাণুর নাম ও ইহার মরফোলজি হল:
❖ জীবাণুর নাম:
Corynebacterium diphtheriae
❖ মরফোলজি (Morphology):
1. গ্রাম-পজিটিভ রড (Gram-positive bacilli)।
2. ব্যাসিলাস আকারের, কিন্তু অমসৃণ (club-shaped)।
3. Pleomorphic (বিভিন্ন আকার ধারণ করতে পারে)।
4. অ্যানারোবিক এবং non-motile।
5. Metachromatic granules বিদ্যমান (Albert stain-এ সবুজ দেহ, নীল দানাদার অংশ)।
6. “Chinese letter” বা V/W আকৃতিতে অবস্থান করে।
---
৬। (খ) হুকওয়ার্মের জীবনচক্র বর্ণনা কর।
উওর :হুকওয়ার্ম (Ancylostoma duodenale) এর জীবনচক্র হল:
❖ ১. ইনফেকটিভ স্টেজ:
Filariform larva (দ্বিতীয় স্টেজের লার্ভা) মাটি থেকে চামড়া ভেদ করে শরীরে প্রবেশ করে।
❖ ২. লার্ভার চলাচল:
ত্বক → রক্তনালী → ফুসফুস → গলা
তারপর গিলে ফেলা হয় → ক্ষুদ্রান্ত্রে পৌঁছে
❖ ৩. পূর্ণবয়স্ক কৃমি:
ক্ষুদ্রান্ত্রে পরিণত হয়ে হুকের মতো মুখ দিয়ে রক্ত শোষণ করে।
ডিম (ova) তৈরি করে → পায়খানার সঙ্গে বাইরে বের হয়।
❖ ৪. বাইরে মাটিতে:
ডিম থেকে লার্ভা হয় → Rhabditiform → Filariform লার্ভা → পুনরায় সংক্রমণ।
🔁 জীবনচক্র পুনরাবৃত্ত হয়।
---
৬। (গ) আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়ার কারণ ও ইনভেস্টিগেশন লিখ।
উওর : আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া (Iron Deficiency Anemia) কারণসমূহ ও ইনভেস্টিগেশন হল :
❖ কারণসমূহ (Causes):
1. পুষ্টিহীনতা: খাদ্যে পর্যাপ্ত আয়রনের অভাব।
2. রক্তক্ষরণ:
মাসিকের অতিরিক্ত রক্তপাত (menorrhagia)।
পেপটিক আলসার, হুকওয়ার্ম সংক্রমণ।
3. শোষণের সমস্যা:
সিলিয়াক ডিজিজ, ক্রোনস ডিজিজ।
4. গর্ভাবস্থা:
বাড়তি চাহিদা, কিন্তু আয়রনের ঘাটতি।
5. দ্রুত বৃদ্ধি:
শিশুরা ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
---
❖ ইনভেস্টিগেশন (Investigations):
পরীক্ষা প্রত্যাশিত ফলাফল
১. Hemoglobin (Hb) কম থাকে (anemia)।
২. Serum iron level হ্রাস পায়।
৩. Total Iron Binding Capacity (TIBC) বেড়ে যায়।
৪. Serum ferritin কমে যায় (body iron store কম)।
৫. Peripheral blood film হাইপোক্রোমিক, মাইক্রোসাইটিক RBC দেখা যায়।
৬. Stool for occult blood রক্তক্ষরণ নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।
========
৭। (ক) কোষীয় অভিযোজন এর সংজ্ঞা। কোষীয় অভিযোজন এর 'ধরনগুলো লিখ।
(খ) সংজ্ঞাসহ ফ্যাগসাইটোসিসের ধাপসমূহ লিখ।
(গ) থ্রম্বাস তৈরি হওয়ার ফ্যাক্টরগুলো লিখ।
---
৭। (ক) কোষীয় অভিযোজন এর সংজ্ঞা। কোষীয় অভিযোজন এর 'ধরনগুলো লিখ।
উওর: কোষীয় অভিযোজন (Cellular Adaptation) সংজ্ঞা ও এর 'ধরনগুলো হল:
❖ সংজ্ঞা:
কোষের স্বাভাবিক পরিবেশ পরিবর্তনের ফলে টিকে থাকার জন্য যে গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তন ঘটে, তাকে কোষীয় অভিযোজন বলে।
❖ কোষীয় অভিযোজনের ধরন (Types of Cellular Adaptation):
1. অ্যাট্রোফি (Atrophy):
কোষের আকার ও কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়া।যেমন: মাংসপেশির ব্যবহার কমে গেলে।
2. হাইপারট্রফি (Hypertrophy):কোষের আকার বৃদ্ধি।যেমন: ব্যায়াম করলে পেশি বড় হওয়া।3. হাইপারপ্লেসিয়া (Hyperplasia):কোষসংখ্যা বৃদ্ধি।যেমন: গর্ভাবস্থায় স্তন গ্রন্থির বৃদ্ধি।4. মেটাপ্লেসিয়া (Metaplasia):এক ধরনের কোষ অন্য ধরনের কোষে রূপান্তর।যেমন: ধূমপানে শ্বাসনালীর কোষ পরিবর্তন।5. ডিসপ্লেসিয়া (Dysplasia):কোষের আকার, আকৃতি ও বিন্যাসে অস্বাভাবিক পরিবর্তন।প্রি-ক্যান্সারাস অবস্থার সূচক।
---
৭। (খ) সংজ্ঞাসহ ফ্যাগসাইটোসিসের ধাপসমূহ লিখ।
উওর : ফ্যাগোসাইটোসিস (Phagocytosis) সংজ্ঞা ও ধাপসমূহ হল:
❖ সংজ্ঞা:
এটি একটি প্রতিরক্ষা প্রক্রিয়া, যেখানে ফ্যাগোসাইট কোষ (যেমন নিউট্রোফিল, ম্যাক্রোফেজ) জীবাণু বা মৃত কোষ গ্রাস করে ধ্বংস করে।
❖ ধাপসমূহ (Steps of Phagocytosis):
1. চিহ্নিতকরণ (Recognition):জীবাণুকে Opsonin (IgG, C3b) দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।2. আবর্তন (Engulfment):কোষ ছদ্মপদ (pseudopodia) দিয়ে জীবাণুকে ঘিরে নেয়।3. ফ্যাগোসোম গঠন:জীবাণু ঘেরা ভেসিকলকে ফ্যাগোসোম বলা হয়।4. লাইসোজোম সংযুক্তি:ফ্যাগোসোম + লাইসোজোম = ফ্যাগোলাইসোজোম।5. ধ্বংস (Killing and degradation):অক্সিজেন-নির্ভর ও অক্সিজেন-বিহীন প্রক্রিয়ায় জীবাণু ধ্বংস হয়।
---
৭। (গ) থ্রম্বাস তৈরি হওয়ার ফ্যাক্টরগুলো লিখ।
উওর : থ্রম্বাস (Thrombus) তৈরি হওয়ার ফ্যাক্টরসমূহ হল :
❖ Virchow's Triad অনুযায়ী থ্রম্বাস সৃষ্টির ৩টি প্রধান কারণ:
1. Endothelial Injury (রক্তনালীর আভ্যন্তরীণ ক্ষতি):
যেমন: অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস, ট্রমা, সার্জারি
2. Abnormal Blood Flow (রক্তপ্রবাহের অস্বাভাবিকতা):
স্টেসিস (স্থির রক্তপ্রবাহ) বা টারবুলেন্স।
যেমন: DVT, Varicose veins।
3. Hypercoagulability (রক্তের অতিরিক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা):জন্মগত বা অর্জিতযেমন: ক্যান্সার, গর্ভাবস্থা, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি গ্রহণ।
=========
৮। সংক্ষেপে লিখঃ
(ক) সিএসএফ(খ) গ্যাংগগ্রীন
(গ) টিউবারকুলোসিস,(ঘ) ভিডিআরএল,
(ঙ) প্রদাহ।
নিচে ৮ নম্বর প্রশ্নের (ক) থেকে (ঙ) পর্যন্ত প্রতিটি টার্মের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা পরীক্ষার খাতায় লেখার উপযোগী করে পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলো:
৮। সংক্ষেপে লিখঃ
(ক) CSF (Cerebrospinal Fluid)
এটি স্বচ্ছ ও বর্ণহীন একধরনের তরল।মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডকে ঘিরে রাখে।উৎপত্তি হয়: Choroid plexus থেকে।কাজ: মস্তিষ্ককে আঘাত থেকে রক্ষা করে, পুষ্টি ও বর্জ্য পরিবহন করে।স্বাভাবিক পরিমাণ: প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রায় ১৫০ মি.লি.।
---
(খ) Gangrene (গ্যাংগ্রীন)
এটি শরীরের কোনো অংশের কোষমৃত্যু ও পচনের প্রক্রিয়া।কারণ: রক্তসঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাওয়া বা সংক্রমণ।প্রকারভেদ:1. Dry gangrene (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধীরগতির, কালচে)।2. Wet gangrene (ব্যাকটেরিয়াজনিত, দুর্গন্ধযুক্ত)।3. Gas gangrene (Clostridium perfringens দ্বারা সংক্রমণ)।
---
(গ) Tuberculosis (টিউবারকুলোসিস)
এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রামক ব্যাধি।জীবাণু: Mycobacterium tuberculosis।প্রধান লক্ষণ: দীর্ঘস্থায়ী কাশি, রাতে ঘাম, ওজন হ্রাস, জ্বরপ্রধান আক্রান্ত অঙ্গ: ফুসফুস (Pulmonary TB)ছড়ায়: বায়ুবাহিত (কাশি, হাঁচি)
---
(ঘ) VDRL (Venereal Disease Research Laboratory Test)
এটি সিফিলিস রোগ শনাক্ত করার একটি সেরোলজিক টেস্ট।নির্ণয় করে: Treponema pallidum এর প্রতি অ্যান্টিবডি।ফলাফল:
Reactive/Positive: ইনফেকশন থাকতে পারে।
Non-reactive/Negative: ইনফেকশন নেই।
এটি একটি screening test, নিশ্চিত পরীক্ষার জন্য FTA-ABS টেস্ট করা হয়।
---
(ঙ) প্রদাহ (Inflammation)
এটি শরীরের টিস্যুর কোনো ক্ষতি বা সংক্রমণের প্রতিক্রিয়া।প্রধান লক্ষণ (5 Cardinal signs):
1. লালচে হওয়া (Rubor)
2. গরম হওয়া (Calor)
3. ব্যথা (Dolor)
4. ফোলা (Tumor)
5. কার্যক্ষমতা হ্রাস (Functio laesa)
উদ্দেশ্য: আক্রান্ত স্থানকে সনাক্ত করা, রক্ষা করা ও সারানো।
-- ডাঃ কাজী সাইফ উদ্দীন আহমেদ
বি এস সি(বায়োকেমিস্ট্রি), ঢা.বি,
ডি এইচ এম এস (বোর্ড স্ট্যান্ড), ঢাকা
প্রভাষক,
ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ।
আমাদের লেখার কোন অংশ রেফারেন্স ছাড়া কপি বা শেয়ার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ।
>Share by:
Make a comments as guest/by name or from your facebook:
Make a comment by facebook: