অ্যানেস্থেসিয়া বা অবেদন
(Anaesthesia)
প্রশ্ন-০১.১৪। এ্যানেস্থেসিয়া বা অবেদন কাহাকে বলে?
উত্তর: অপারেশানের পূর্বে যে প্রক্রিয়া দ্বারা ব্যথা বেদনার অনুভূতি বিলোপ করিয়া অবেদন অবস্থা সৃষ্টি করা হয়, তাহাকে অ্যানেস্থেসিয়া বা অবেদন বলে।
প্রশ্ন-০১.১৫। অ্যানেসথেটিক বা অবেদন ঔষধ কাহাকে বলে?
উত্তর: যে সমস্ত ঔষধ দ্বারা অনুভূতি বিলোপ করা হয় তাহাকে অ্যানেস্থেটিক ঔষধ বলা হয়।
প্রশ্ন-০১.১৬। অ্যানেস্থেটিক বা অবেদনে ব্যবহৃত ঔষধসমূহ কি কি?
উত্তর: অ্যানেস্থেসিয়া বা অবেদনে ব্যবহৃত ঔষধসমূহের বর্ণনা নিয়ে প্রদত্ত হইল।
১) বাষ্পাকারে শ্বাস ও প্রশ্বাসের সহিত প্রয়োগযোগ্য-
ইথার, ক্লোরোফর্ম, এথিল ক্লোরাইড, সাইক্লোপ্রপেন, ট্রোইলিন প্রভৃতি।
২) শিরাপথে প্রয়োগযোগ্য ঔষধ-
পেন্টোথাল, এভিড্যান প্রভৃতি।
৩) বুনিয়াদি অ্যানেস্থেসিয়া ঔষধ-
মরফিন, পেথিডিন, হায়োমিন, সেকোনাল, নেমবুটাল, অবলিভন, ফেনারগন প্রভৃতি।
৪) স্থানিক বা আঞ্চলিক অ্যানেস্থেসিয়া -
প্রোকেন, নভোকেন, কোকেন, জাইলোকেন প্রভৃতি।
৫) স্পাইন্যাল অ্যানেস্থেসিয়া -
স্টোভেন, নুপারকেন, জাইলোকেন প্রভৃতি।
৬) বিশিষ্ট অ্যানেস্থেসিয়া-
ভেগোলাইসেন, আরফোনাড, ট্রোফেনিয়াম প্রভৃতি।
প্রশ্ন-০১.১৭। মেজর সার্জারীর ক্ষেত্রে অজ্ঞান করার পূর্ব প্রস্তুতিগুলি বর্ণনা কর।
উত্তর: যে প্রক্রিয়া দ্বারা ব্যথাবেদনার অনুভূতি বিলোপ করিয়া অবেদন অবস্থা সৃষ্টি করে তাহাকে অ্যানেস্থেসিয়া বলে। যে সমস্ত ঔষধ দ্বারা অনুভূতি বিলোপ করা হয় তাহাকে অ্যানস্থেটিক ঔষধ বলে। অ্যানস্থেটিক ঔষধ দ্বারাই অপারেশানের পূর্বে রোগীকে অজ্ঞান করা হয়। মেজর সার্জারীর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের পূর্বে অস্ত্রোপচার বিষয়ে নানা রকম সম্ভব অসম্ভব চিন্তা করিয়া মন ও শরীরকে দুর্বল করিয়া ফেলে। এই ভয় ও মানসিক উদ্বেগ ও উত্তেজনা শক সৃষ্টির সহায়তা করে। এই কারণে এইসব অবাঞ্ছনীয় চিন্তা দূর করিয়া অপারেশান কক্ষে আনিবার পূর্বেই নিজের বিছানায় রোগী যাহাতে নিদ্রাভিভূত হয় তাহার ব্যবস্থা করা হয়। রোগী নিদ্রাভিভূত হওয়ার পর রোগীকে অজ্ঞান করিয়া অপারেশান করা হয়।
অজ্ঞান করার পূর্বে মাউথ গ্যাগ, এয়ারওয়ে নল, জিহ্বার ফরসেপ, স্পঞ্জ, সোয়াব লোশন এবং একটি ট্রেতে অ্যাড্রিনালিন, মেথাড্রিন, ন্যালোরফিন, নিয়োস্টিগ্যামিন সাজাইয়া সঙ্গে বিশোধিত সিরিঞ্জ ও অক্সিজেন সিলিন্ডার অবশ্যই তৈরী থাকিবে।
প্রশ্ন-০১.১৮। অ্যানেস্থেসিয়া বা অবেদন ঔষধ প্রয়োগ প্রণালী লিখ।
উত্তর: অ্যানেস্থেসিয়ায় ব্যবহৃত ঔষধসমূহের মধ্যে ক্লোরোফর্ম বেশ প্রচলিত ছিল। বর্তমানে ইহার বিষক্রিয়ার জন্য আর ব্যবহৃত হয় না। ইথার সবচাইতে নিরাপদ ও সাধারণত ব্যবহৃত হয়। ইথারের সহিত পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন গ্যাস ব্যবহার করা হয়। নাইট্রাস অক্সাইড ও কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসও প্রয়োজন মত ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি এই সব অবেদনিক ঔষধ বাষ্পযন্ত্রের সাহায্যে প্রয়োগ করা হয়। এই যন্ত্রের নাম বয়েলস এপারেটাস। রবারের নল ও মুখোশের সাহায্যে রোগীর প্রশ্বাসের সহিত ইহা প্রয়োগ করা হয়। অধুনা অবেদন প্রথার আরও উন্নতি সাধিত হইয়াছে। শিরাপথে পেন্টোথাল ইনজেকশান দিয়া তাহার পর হালকাভাবে গ্যাসের সাহায্যে অবেদন চালু রাখা হয়। শিরাপথে মাংসপেশী শিথিলকারী ঔষধ ইনজেকশান দেওয়া হয়, উদরের অপারেশানে ইহা বিশেষভাবে উপযোগী।
আঞ্চলিক অবেদনে দেহের অঞ্চলবিশেষের স্নায়ুতে নভোকন ইনজেকশান দিয়া ব্যথাবেদনার অনুভূতি লোপ করা হয়। বিকর্তালাপত্য এলাকার মশল
স্পাইন্যাল অ্যানেস্থেসিয়ায় কটিদেশ লাম্বার পাংচার পূর্বক মেরুদণ্ড অভ্যন্তরস্থ নালীতে স্টোভেন, নুপারকেন, জাইলোকেন প্রভৃতি ঔষধ ইনজেকশান করিয়া সুষুম্নাকাণ্ডের স্নায়ুগুলিকে অংশ করা হয়।
প্রশ্ন-০১.১৯। অ্যানেস্থেসিয়া বা অবেদনের জটিলতা বা বিপদসমূহ লিখ।
উত্তর: অ্যানেস্থেসিয়া বা অবেদনের জটিলতা বা বিপদ নিম্নরূপে সংঘটিত হইতে পারে।
১) হঠাৎ শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হইয়া যাইতে পারে।
২) অকস্মাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হইতে পারে।
৩) অজ্ঞান অবস্থায় রোগীর জিহ্বা মুখগহ্বরের পিছনে পড়িয়া গিয়া শ্বাসনালী বন্ধ হইতে পারে ও নিঃশ্বাস প্রশ্বাস রোধ হইতে পারে।
৪) রক্ত মিশ্রিত লালা ফুসফুসে জমিয়া জীবাণু সংক্রমণের ফলে নিমোনিয়া হইতে পারে। আগামী এক চাঙ্গা ক
৫) ক্লোরোফরমের বিলম্বিত বিষক্রিয়া ঘটিতে পারে।
৬) ফুসফুসের একটি অংশের ক্রিয়ালোপ (Pulmonary Collapse) হইতে পারে।
কাজী সাইফ উদদীন আহমেদ
>Share by:
Make a comments as guest/by name or from your facebook:
Make a comment by facebook: