সার্জারী - ৩ নং ক্লাস, সেপসিস বা বীজদূষণ এন্টিসেপটিক ঔষধ প্রয়োগ জীবাণুমুক্ত করণ বা বিশোধন

গ) সেপসিস বা বীজদূষণ এন্টিসেপটিক ঔষধ প্রয়োগ জীবাণুমুক্ত করণ বা বিশোধন

(Sepsis, Antiseptic, Measures and Sterilisation)


প্রশ্ন-০১.২০। সেপসিস বা বীজদূষণ কাহাকে বলে বা সংজ্ঞা দাও।

উত্তর: একজুডেশন সহ বা একজুডেশন ব্যতীত জীবাণু দ্বারা সংক্রমণ হওয়ার পর দূষিত হওয়াকে সেপসিস বা বীজদূষণ বলে।


প্রশ্ন-০১.২১। এন্টিসেপটিক মেজার বা জীবাণুনাশক পদক্ষেপ কাহাকে বলে?

উত্তর: জীবাণু দ্বারা সংক্রমণ হওয়ার পর দূষিত হওয়ার নাম সেপসিস। এই দূষিত হওয়া বন্ধ করার জন্য বা জীবাণু বৃদ্ধি দমন করার জন্য যে প্রক্রিয়া বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় তাহাকে এন্টিসেপটিক মেজার বা জীবাণু নাশক পদক্ষেপ বলে।


প্রশ্ন-০১.২২। এন্টিসেপটিক মেজারের বা জীবাণুনাশক পদক্ষেপের গুরুত্ব লিখ।

উত্তর: এন্টিসেপটিক মেজার বা জীবাণুনাশক পদক্ষেপের গুরুত্ব অপরিসীম।

কেননা সকল প্রকার সংক্রমণকে ইহার মাধ্যমে প্রতিহত করা যায়। যে কারণে রোগের বিস্তার বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু সংখ্যক জীবাণু ধ্বংস হয়. এবং কিছু জীবাণুর বৃদ্ধি দমন হয়। এন্টিসেপটিক মেজারের মধ্যে রহিয়াছে এন্টিসেপটিক ঔষধ দ্বারা জীবাণু বৃদ্ধি দমন করা। আবার এই প্রক্রিয়ার সাহায্যে যে সকল জিনিষপত্র ও যন্ত্রাদি ব্যবহৃত হয় সেগুলিকে সম্পূর্ণভাবে জীবাণু শূন্য করা হয়। এইভাবে জীবাণুনাশক পদক্ষেপ গ্রহণ করিলে সকল প্রকার সংক্রমণ প্রতিহত করা যায়।


প্রশ্ন-০১.২৩। এন্টিসেপটিক মেজার বা জীবাণুনাশক পদক্ষেপ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।

বা, কি কি বিষয়ের উপর এন্টিসেপটিক মেজার নির্ভর করে আলোচনা কর।'

উত্তর: নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর এন্টিসেপটিক মেজার নির্ভর করে এবং নিম্নলিখিতভাবে ইহা করা যাইতে পারে।
১) জীবাণু সংক্রমণের উৎসের বিনাশ করিতে হইবে এবং ক্ষরিত পূজ নিরাপদে অপসারণ করিতে হইবে।

২) সাধারণ স্বাস্থ্য বিধিমতে রোগ বিস্তার হ্রাস তথা জীবাণুর বিনাশ সাধন করিতে হইবে।

৩) অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং অস্ত্রোপচারের স্থান অবশ্যই সংক্রমণ মুক্ত হইতে হইবে। ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও দ্রব্যাদি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করিতে হইবে।

৪) অপারেশান থিয়েটার অবশ্যই জীবাণুমুক্ত হইতে হইবে।

৫) সার্জনকে অস্ত্রোপচারের সময় খুবই সতর্ক থাকিতে হইবে।

৬) রোগীকে পূর্বেই সব বিষয়ে অবহিত করাইতে হইবে।


প্রশ্ন-০১.২৪। সেপসিস বা জীবাণুদূষণ কিভাবে বন্ধ করা যায়?

উত্তর: দুইভাবে সেপসিস বা বীজ দূষণ বন্ধ করা যায়।

১) এন্টিসেপটিক ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে জীবাণু বৃদ্ধি দমন করা যায়।

২) যে স্থানে অস্ত্রোপচার করা হইবে সেই স্থানটি এবং যে সমস্ত জিনিষ পত্র ও যন্ত্রাদি অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত হয় সেগুলিকে সম্পূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত করিতে হইবে।


প্রশ্ন-০১.২৫। এন্টিসেপটিক ঔষধ কি?

উত্তর: যে রাসায়নিক ঔষধ প্রয়োগ দ্বারা জীবাণু বৃদ্ধি দমন করা হয় ঐ রাসায়নিক ঔষধের নাম এন্টিসেপটিক ঔষধ।


প্রশ্ন-০১.২৬। এন্টি-সেপসিস কাহাকে বলে?

উত্তর: যে প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি দ্বারা জীবাণু বৃদ্ধি দমন করা হয় বা বীজদূষণ নিবারিত হয় তাহাকে এন্টি-সেপসিস বা বীজবারণ বলে।


প্রশ্ন-০১.২৭। এসেপ্টিক টেকনিক বা নির্বীজন বলিতে কি বুঝ?

উত্তর: যে প্রক্রিয়া দ্বারা অস্ত্রোপচারের জায়গাটি অথবা যে সকল জিনিষপত্র ও যন্ত্রাদি অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত হয় সেগুলিকে সম্পূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয় তাহাকে এসেপ্টিক টেকনিক বা নির্বীজন বলে।





প্রশ্ন-০১.২৮। স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্তকরণ বা বিশোধন কাহাকে বলে?

উত্তর : যে বিশিষ্ট পদ্ধতি দ্বারা কোন জিনিষকে সম্পূর্ণভাবে জীবাণুশূন্য করা হয় তাহাকে স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্তকরণ বা বিশোধন বলে।


প্রশ্ন-০১.২৯। জীবাণুনাশন বা ডিস-ইনফেকশান কাহাকে বলে?

উত্তর : জীবাণুনাশক প্রক্রিয়ার নাম জীবাণুনাশন বা ডিসইনফেকশান। 
যে সমস্ত ঔষধ দ্বারা জীবাণু নাশ করা হয় তাহাদিগকে জীবাণুনাশক বা ডিস-ইনফেকটেন্টস বলা হয়। কাজেই সব জীবাণু নাশক ঔষধই বীজবারক বা এন্টিসেপটিক, কিন্তু সব বীজবারক বা এন্টিসেপটিক ঔষধ জীবাণুনাশক নয়।



প্রশ্ন-০১.৩০। স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্তকরণ বা বিশোধনের পদ্ধতিগুলি বর্ণনা কর।

উত্তর: তিনটি পদ্ধতিতে স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্তকরণ করা হয়। 
১) ভৌতপদ্ধতি, 
২) রাসায়নিক পদ্ধতি, 
৩) চাপপূর্ণ বাষ্প দ্বারা।

১) ভৌত পদ্ধতি (Physical Method)- সাধারণত ব্যাকটিরিওলজি বা ল্যাবরেটরীতে এই পদ্ধতিতে স্টেরিলাইজেশন করা হয়।

ক) শুষ্ক তাপ- অগ্নিশিখা, শুষ্ক বাতাস, ইনফ্রারেডিয়েশন প্রভৃতির সাহায্যে শল্য চিকিৎসায় ব্যবহৃত জিনিষপত্র এবং অন্যান্য জিনিষপত্র জীবাণুমুক্ত করা হয়।

খ) আর্দ্রতাপ- ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করিয়া (১০০০০) যন্ত্রপাতি, এনামেল, রবারের জিনিষপত্র প্রভৃতিকে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকমুক্ত করা হয়।

গ) ফিল্টারের সাহায্যে- বার্ক ফিল্ড ফিল্টার, সিজ় ফিল্টার, সিনটার্ড ফিল্টার প্রভৃতি দ্বারা পানীয় জল বিশুদ্ধ করা হয়।

ঘ) সূর্যকিরণ- জামা কাপড়, বিছানাপত্র রৌদ্রে দিয়া বিশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

৫) রেডিয়েশান দ্বারা- রেডিয়েশন বা বিভিন্ন ধ্বংসকারী আলো প্রয়োগে জীবাণু মারার ব্যবস্থা করা হয়।

২) রাসায়িনক পদ্ধতি (Chemical Method)- রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা জীবাণু ধ্বংস ও জীবাণুর বংশ বৃদ্ধি ও বিস্তার রোধ করা হয়।

ক) এলকোহল, ইথাইল, আইসোপ্রোপিল প্রভৃতি দ্বারা।

খ) অ্যালডিহাইড- যেমন ফর্মালডিহাইড প্রভৃতি দ্বারা।

গ) বিভিন্ন রং।

ঘ) হ্যালোজেন-যেমন, ক্লোরিন, ব্রোমিন, আয়োডিন প্রভৃতি।

৫) ফেনল।

চ) মেটালিক লবণ।

ছ) এসিড ও ক্ষার জারক পদার্থ প্রভৃতি।

জ) বিভিন্ন গ্যাস যেমন, এথিলিন অক্সাইড, ফর্মালডিহাইড গ্যাস, সালফার ডাই অক্সাইড প্রভৃতি।

৩) চাপপূর্ণ বাষ্প দ্বারা- এই পদ্ধতিতে অত্যন্ত কম সময়ে জীবাণুমুক্ত করা যায়। ইহাতে যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাহার নাম হাইপ্রেসার স্টেরিলাইজার বা অটোক্লেভ। ইহার সাহায্যে তোয়ালে, গাউন, মাস্ক, চাদর, স্পঞ্জ, ড্রেসিং প্রভৃতি জীবাণু মুক্ত করা খুবই সুবিধাজনক।



প্রশ্ন-০১.৩১। সার্জারী বা শল্যবিদ্যায় স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্তকরণের (বিশোধনের) গুরুত্ব আলোচনা কর।

উত্তর: স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্তকরণ শল্যবিদ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শল্যবিদ্যায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও জিনিষপত্র যেমন কাঁচি, ছুরি, সুই, স্প্যাচুলা, ফরসেপস, ইনজেকশানের সিরিঞ্জ, শিশি বোতল এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও জিনিষপত্র জীবাণুমুক্ত করার প্রয়োজন হয়। নতুনা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য জীবাণুর সংস্পর্শে আসিয়া এগুলি কলুষিত হয়। এইসব কলুষিত যন্ত্রপাতি ও জিনিষপত্র শল্যবিদ্যায় ব্যবহার করিলে রোগজীবাণু রক্তের সাথে মিশিয়া রক্ত প্রবাহের সঙ্গে সমস্ত দেহে বিস্তার লাভ করিতে পারে। দেহের লসিকা রসের সহিত জীবাণু মিশিয়া রোগ ছড়াইতে পারে। আবার রোগ জীবাণু সরাসরি চামড়া ও অন্য তন্ত্র বরাবর অবিচ্ছিন্ন ভাবে প্রসার লাভ করিতে পারে। অস্ত্রোপচার দ্বারা রোগীর চর্ম, রক্তনালী ও অন্যান্য তন্ত্র কর্তিত হয়। কাজেই অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও ব্যবহৃত জিনিষপত্র যদি সম্পূর্ণভাবে বিশোধন বা জীবাণুমুক্ত না হয় তাহা হইলে কর্তিত অংশ দিয়া রোগ জীবাণু রোগীর দেহে অতি সহজেই বিস্তার লাভ করিবে। ইহার ফলে রোগীর অবস্থা আরও জটিল হইয়া পড়িবে এমনকি রোগীর প্রাণহানিও ঘটিতে পারে। বিশোধন বা জীবাণুমুক্তকরণ দ্বারা আমরা এই সকল বিপদ ও জটিলতা প্রতিরোধ করিতে পারি। তাহা ছাড়া রোগীর ব্যবহৃত পোষাক পরিচ্ছদ, চিকিৎসক ও সেবাকারীদের ব্যবহৃত পোষাক সব সময় জীবাণুমুক্ত করা না হইলে সুস্থ্য ব্যক্তির দেহে রোগজীবাণু প্রবেশ করিতে পারে এবং বিস্তার লাভ করিতে পারে। তাই শল্যবিদ্যায় স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্ত করনের গুরুত্ব অপরিসীম।



প্রশ্ন-০১.৩২। উচ্চ চাপযুক্ত বিশোধন যন্ত্রে (অটোক্লেভ) স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি বর্ণনা কর।

উত্তর : উচ্চ চাপযুক্ত বিশোধন যন্ত্রে বা অটোক্লেভে জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতির বর্ণনা নিম্নে দেওয়া গেল।

অটোক্লেভে চাপপূর্ণ বাষ্পদ্বারা বিভিন্ন জিনিষপত্র জীবাণুমুক্ত করা হয়। একই সাথে উচ্চ চাপ ও তাপ প্রয়োগের জন্য অটোক্লেভ ব্যবহার করা হয়। ইহাতে চতুর্দিকে বন্ধ কক্ষে (ড্রামে) জিনিষপত্রসমূহ ট্রের উপরে রাখা হয়। উপরে ঢাকনা থাকে, সেটি ক্রু এবং ক্ল্যাম্প দ্বারা বন্ধ করার ব্যবস্থা থাকে। সিলিন্ডারের মধ্যে প্রচুর পানি থাকে। ঐ পানি উত্তপ্ত হইয়া স্টীম সৃষ্টি করে, তাহা ছাড়া আবদ্ধ কক্ষে বাতাসের চাপও খুব বাড়িয়া যায়। অন্ততঃ ৩০ মিনিট ধরিয়া অটোক্লেভে রাখিয়া দিলে প্রায় সব জীবাণু মারা যায়। অটোক্লেভের মধ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা থাকে। চাপ ও তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকার জন্য কাজ খুব ভালভাবে চলে। জীবাণু ধ্বংস করার জন্য এই পদ্ধতি প্রচুর ব্যবহার হয়। সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি এবং রোগীদের ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ইহাতে স্টেরিলাইজ করা যায়।



প্রশ্ন-০১.৩৩। ভিজাতাপ প্রয়োগে (স্টিমার) স্টেরিলাইজেশন বা জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতির বর্ণনা দাও।

উত্তর: ভিজা তাপ প্রয়োগে বা স্টিমারের সাহায্যে অতি উত্তপ্ত জলীয় বাষ্প দ্বারা (১০০০০) জীবাণু প্রায় সব মারা যায়। এ জন্য ব্যবহৃত হয় স্টিমার (Steamer)। স্টিমারে একটি আবদ্ধ কক্ষের নিচে পানি রাখা হয়। তাহার উপরে বহু ছিদ্রযুক্ত একটি ট্রে থাকে। নিচের দিক হইতে একাধিক উত্তাপ প্রয়োগ করা হয়।। পানি টগবগ করিয়া ফুটিয়া উঠে। ঐ বাষ্প উচ্চ তাপে বস্তুগুলিকে একটি আবদ্ধ কক্ষের মধ্যে জীবাণু মুক্ত করে। প্রায় ২০ হইতে ৩০ মিনিট ঐ উচ্চ তাপের স্টিমের দ্বারা প্রায় সব জীবাণুই মারা যায়।



প্রশ্ন-০১.৩৪। ধারালো যন্ত্রপাতি কিভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়? গরম পানিতে সিদ্ধ করিয়া ধারালো যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করিলে কি হয়?


উত্তর: ধারালো যন্ত্রপাতি বিশুদ্ধ লাইসলে ৫ মিনিট ডুবাইয়া রাখার পর সাধারণ গরম পানিতে বা এলকোহলে ধুইয়া জীবাণুমুক্ত করিয়া ব্যবহার করা হয়। তবে অটোক্লেভে জীবাণুমুক্ত করা সবচাইতে নিরাপদ।

খুব বেশী গরম পানিতে ধারালো যন্ত্রপাতি সিদ্ধ করিলে উহার ধার নষ্ট হয়।



প্রশ্ন-০১.৩৫। ভোঁতা যন্ত্রপাতি ও অস্ত্র কিভাবে জীবাণুক্ত করা হয়?

উত্তর : ধাতুনির্মিত ভোঁতা যন্ত্রপাতি ও অস্ত্র ট্রের উপর সাজাইয়া ফুটন্ত পানিতে ডুবানো হয়। ৫ মিনিটকাল পানিতে ডুবাইয়া রাখা হয়। ফুটন্ত পানিতে ১-২% সোডা বাই কার্বনেট ব্যবহার করিলে পানির স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে ও অস্ত্রের মরিচা ধরা রোধ করে। স্টিমারের সাহায্যে ভেজা তাপ প্রয়োগেও জীবাণুমুক্ত করা যায়।




প্রশ্ন-০১.৩৬। ধারালো অস্ত্র, কাঁচি, ছুরি, সুঁই কিভাবে জীবাণু মুক্ত করিবে?

উত্তর : অস্ত্রেপচারের পূর্বে ধারালো ছুরি, কাঁচি, সুঁই প্রভৃতি বিশুদ্ধ লাইসলে ৫ * মিনিট ডুবাইয়া রাখার পর সাধারণ গরম পানিতে অথবা এলকোহলে ধুইয়া কিংবা চাপযুক্ত বাষ্পের (অটোক্লোভে) সাহায্যে জীবাণুমুক্ত করা হয়।



প্রশ্ন-০১.৩৭। ড্রেসিং গজ, তুলা, চাদর, তোয়ালে প্রভৃতি কিভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়?

উত্তর : ড্রেসিং গজ, তুলা, চাদর, তোয়ালে প্রভৃতি চাপযুক্ত বাষ্পের দ্বারা অটোক্লেভে জীবাণুমুক্ত করা হয়। এইসব জিনিষ তুলা দ্বারা ঢাকিয়া মোটা কাপড়ের থলিতে ভরিয়া দিতে হয়। পরে অটোক্লেভে সাজাইয়া রাখিয়া ড্রামের মুখ বন্ধ করিয়া দিতে হয়। এইভাবে এগুলি জীবাণুমুক্ত করা হয়।



প্রশ্ন-০১.৩৮। সিরিঞ্জ বা পিচকারী কিভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়?

উত্তর: সিরিঞ্জের সুঁই, নল ও চাপদণ্ড আলাদা আলাদা ভাবে তুলায় জড়াইয়া ঠাণ্ডা পানিতে ডুবাইয়া দিতে হইবে এবং ধীরে ধীরে স্ফুটনাংক পর্যন্ত তাপ উঠাইতে হইবে। অটোক্লেভেও সিরিঞ্জ বা পিচকারী জীবাণুমুক্ত করা যায়।



প্রশ্ন-০১.৩৯। রবারের জিনিষপত্র কিভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়?

উত্তর: রবারের জিনিষপত্র কোন জীবাণুনাশক যেমন লোশন, কাবলিক, লাইসল প্রভৃতিতে ডুবাইয়া রাখার পর সোডা বিহীন পানিতে পাঁচমিনিট ফুটাইয়া জীবাণুমুক্ত করা হয়।



প্রশ্ন-০১.৪০। ত্বক বা চর্ম কিভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়?

উত্তর: আয়োডিন, এলকোহল, সিটাভলন জেনসিয়ান ভায়োলেট প্রভৃতির দ্বারা ত্বক জীবাণুমুক্ত করা হয়।



প্রশ্ন-০১.৪১। থার্মোমিটার কিভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়?


উত্তর: পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানিতে থার্মোমিটার পানিতে ধুইয়া এলকোহলে বা ৫% কার্বলিক লোশানে আধা ঘণ্টা ডুবাইয়া রাখিয়া জীবাণুমুক্ত করা হয়।



প্রশ্ন-০১.৪২। গামলা, বাটি, ট্রে এবং অন্যান্য এনামেলের জিনিষপত্র এবং পাত্রাদি কিভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়?

উত্তর : গামলা, বাটি, ট্রে এবং এনামেলের অন্যান্য পাত্রাদি সোডাশূন্য ফুটন্ত পানিতে ৫ মিনিট সিদ্ধ করা উচিত। তামার পাত্র ব্যবহার করা উত্তম। অন্যথায় কার্বলিক লোশনে ২০ মিনিট ডুবাইয়া রাখার পর ফুটন্ত পানিতে ধুইয়া ব্যবহার করা উচিত।



প্রশ্ন-০১.৪৩। সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতির জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি আলোচনা কর।

উত্তর : নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করা হয়।

ক) ধারালো অস্ত্র, যন্ত্রপাতি, কাঁচি, সুঁই প্রভৃতি খুব বেশী গরম পানিতে সিদ্ধ করিলে উহার ধার নষ্ট হয়। তাই এগুলি বিশুদ্ধ লাইসলে ৫মিনিট ডুবাইয়া রাখার পর সাধারণ গরম পানিতে বা এলকোহলে ধুইয়া জীবাণুমুক্ত করা হয়। তবে অটোক্লেভে অর্থাৎ উচ্চ চাপযুক্ত বিশোধনযন্ত্রে জীবাণুমুক্ত করা সবচাইতে নিরাপদ।

খ) ভোঁতা যন্ত্রপাতি ও অস্ত্র ট্রের উপর সাজাইয়া ফুটন্ত পানিতে ৫মিনিট কাল ডুবাইয়া রাখিতে হয়। ফুটন্ত পানিতে ১-২% সোডা বাই কার্বনেট ব্যবহার করিলে পানির ফুটনাঙ্ক বাড়ে ও অস্ত্রের মরিচা রোধ হয়।

গ) স্টিমারের সাহায্যে ভেজাতাপ প্রয়োগেও জীবাণুমুক্ত করা যায়।


কাজী সাইফ উদদীন আহমেদ 
>Share by:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন


Make a comments as guest/by name or from your facebook:


Make a comment by facebook:
নবীনতর পূর্বতন