একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে কত পরিমান বাইল থাকে?
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের লিভার প্রতিদিন প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিলিটার বাইল (পিত্ত রস) উৎপাদন করে। লিভার সারাদিন ধরে বাইল তৈরি করে এবং তা পিত্তথলিতে (gallbladder) সঞ্চিত থাকে, যেখানে এটি ঘন হয় এবং প্রয়োজন হলে অন্ত্রের দিকে নিঃসৃত হয়।
প্রতিবার খাদ্য গ্রহণের সময় বিশেষ করে চর্বি যুক্ত খাবারের পরিমাণ বাড়লে পিত্তথলি সংকুচিত হয়ে বাইল রস ক্ষুদ্রান্তে (small intestine) পাঠায়, যাতে খাবারের চর্বি হজম করা সহজ হয়।
শরীরের ভিতর লিভার কিভাবে বাইল তৈরি করে?
লিভার বাইল (পিত্ত রস) তৈরি করার প্রক্রিয়াটি জটিল কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর। নিচে লিভার বাইল তৈরি করার ধাপগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:
1. কোলেস্টেরল থেকে বাইল এসিড তৈরি: লিভার প্রধানত কোলেস্টেরল থেকে বাইল এসিড তৈরি করে। কোলেস্টেরল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা লিভারে রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বাইল এসিডে রূপান্তরিত হয়। এই বাইল এসিডগুলো পরবর্তীতে বাইল সল্টে পরিণত হয়।
2. বাইল সল্টের উৎপাদন: বাইল এসিড লিভারে গ্লাইসিন বা টাউরিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিডের সাথে সংযুক্ত হয়ে বাইল সল্ট তৈরি করে। এই বাইল সল্টগুলো চর্বি হজমে বিশেষভাবে সহায়ক।
3. বিলিরুবিন নিঃসরণ: লিভার পুরানো লোহিত রক্তকণিকা (RBC) ভেঙে বিলিরুবিন তৈরি করে। বিলিরুবিন বাইলের মাধ্যমে অন্ত্রে প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে বর্জ্য হিসেবে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এটি বাইলের হলুদ-সবুজ রঙের জন্য দায়ী।
4. পানি এবং ইলেকট্রোলাইট সংযোজন: বাইলের প্রধান উপাদান হলো পানি, যা এটিকে তরল রাখে এবং ক্ষুদ্রান্তে সহজে যেতে সহায়তা করে। এছাড়া ইলেকট্রোলাইট যেমন সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম মিশে বাইল তৈরি হয়।
5. পিত্তথলিতে সংরক্ষণ: বাইল তৈরি হওয়ার পর এটি সরাসরি ক্ষুদ্রান্তে পাঠানো হয় অথবা পিত্তথলিতে (gallbladder) জমা থাকে। সেখানে এটি ঘন হয় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পাচনতন্ত্রে নিঃসৃত হয়।
বাইল নিঃসরণ প্রক্রিয়া:
যখন খাদ্য, বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাবার, ক্ষুদ্রান্তে প্রবেশ করে, তখন হরমোনের সংকেতের মাধ্যমে পিত্তথলি সংকুচিত হয় এবং বাইল ক্ষুদ্রান্তে নিঃসৃত হয়। বাইল সেখানে চর্বিকে এমালসিফাই করে, যা ফ্যাট-ডাইজেস্টিং এনজাইম লিপেজকে চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে।
এই প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে লিভার প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে বাইল উৎপাদন করে, যা পাচনতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য।
বাইল বা পিত্ত রসের প্রধান উপাদানগুলো হলো:
1. বাইল সল্ট (Bile Salts): যেমন গ্লাইকোকোলেট, টরোকোলেট
2. বাইল পিগমেন্ট (Bile Pigments): প্রধানত বিলিরুবিন, যা রক্তকণিকা ভাঙার ফলে উৎপন্ন হয়।
3. কোলেস্টেরল (Cholesterol): বাইলের একটি অংশ, যা শরীর থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল অপসারণে সহায়ক।
4. ফসফোলিপিড (Phospholipids): যেমন লেসিথিন, যা চর্বি হজমে সহায়তা করে।
5. জল (Water): বাইলের প্রধান উপাদান, যা এটিকে তরল রাখে।
6. ইলেকট্রোলাইট (Electrolytes): যেমন সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, যা বাইলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক।
এই উপাদানগুলো চর্বি হজম এবং শোষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাইলের (Bile) সাধারণ কম্পোজিশন শতকরা হিসাবে নিচে দেওয়া হলো:
1. পানি (Water): 97% - 98%
বাইলের প্রধান উপাদান হলো পানি, যা এটিকে তরল রাখে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে পরিবহণ সহজ করে।
2. বাইল সল্ট (Bile Salts): 0.7%
বাইল সল্ট ফ্যাটের হজম এবং শোষণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। এরা অ্যামফিফিলিক হওয়ায় ফ্যাটকে ছোট ছোট মাইসেলে ভেঙে ফেলে।
3. বাইল পিগমেন্ট (Bile Pigments): 0.2%
এর মধ্যে বিলিরুবিন প্রধান, যা রক্তের হিমোগ্লোবিন ভেঙে যাওয়ার ফলে তৈরি হয়। এটি বাইলকে সবুজাভ বা হলুদাভ রঙ দেয়।
4. কোলেস্টেরল (Cholesterol): 0.06% - 0.3%
কোলেস্টেরল বাইলের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়, তবে এর উচ্চ পরিমাণ পিত্ত পাথর তৈরি করতে পারে।
5. ফসফোলিপিড (Phospholipids): 0.2% - 0.4%
এটি ফ্যাটের হজমে সাহায্য করে এবং বাইলের গঠনগত সুরক্ষা দেয়।
6. ইলেক্ট্রোলাইট (Electrolytes):
সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ক্লোরাইড এবং বাইকার্বোনেটসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রোলাইট বাইলের পিএইচ ব্যালান্স এবং শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এদের শতকরা পরিমাণ কম, তবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই উপাদানগুলো একত্রে বাইলের মূল কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করতে সাহায্য করে, বিশেষত ফ্যাটের হজম এবং শোষণে।
বাইল সল্ট এর নাম গুলো-
বাইল সল্টের কিছু সাধারণ নাম হলো:
1. গ্লাইকোকোলেট (Glycocholate)
2. টরোকোলেট (Taurocholate)
3. গ্লাইকোচেনোডিঅক্সিকোলেট (Glycochenodeoxycholate)
4. টরোচেনোডিঅক্সিকোলেট (Taurochenodeoxycholate)
5. গ্লাইকোডিঅক্সিকোলেট (Glycodeoxycholate)
6. টরোডিঅক্সিকোলেট (Taurodeoxycholate)
এই বাইল সল্টগুলো পিত্ত রসের অংশ, যা চর্বি হজম করতে সহায়তা করে।
শরীরের ভিতর বাইল এর অবস্থা কিভাবে অস্বাভাবিক হয়?
বাইল (bile) হজমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদার্থ যা যকৃৎ (liver) তৈরি করে এবং পিত্তাশয়ে (gallbladder) সংরক্ষিত থাকে। যখন বাইলের পরিমাণ, গঠন, বা নিঃসরণ প্রক্রিয়া অস্বাভাবিক হয়, তখন বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর অস্বাভাবিকতা বিভিন্নভাবে দেখা যেতে পারে:
1. বাইল স্টোন (gallstones): বাইলের মধ্যে থাকা কোলেস্টেরল বা বিলিরুবিন যদি অতিরিক্ত পরিমাণে জমা হয়, তখন পিত্তথলিতে পাথর (gallstones) তৈরি হতে পারে।
2. বাইল রিফ্লাক্স (Bile Reflux): বাইল যদি পিত্তাশয় থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে সঠিকভাবে নিঃসরণ না হয়ে পাকস্থলীতে ফিরে আসে, তখন এটি বাইল রিফ্লাক্সের কারণ হতে পারে। এটি বুক জ্বলা বা অম্বলের অনুভূতি তৈরি করতে পারে।
3. পিত্তনালীতে বাধা (Bile Duct Obstruction): পিত্তনালীতে কোনো প্রকার বাধা (যেমন: গলস্টোন, টিউমার) থাকলে বাইল নিঃসরণ সঠিকভাবে হয় না। এর ফলে চর্বি হজম করতে সমস্যা হয় এবং জন্ডিস দেখা দিতে পারে।
4. কোলেস্টেসিস (Cholestasis): এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে বাইল যথাযথভাবে নিঃসরণ হতে পারে না। এটি যকৃৎ বা পিত্তনালীর সমস্যার কারণে হতে পারে, এবং ত্বকে চুলকানি ও জন্ডিসের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
5. বাইলের অনুপস্থিতি বা স্বল্পতা: যদি বাইল যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি না হয়, তবে চর্বি হজমে সমস্যা হয়, যার ফলে পেটে অস্বস্তি, ফোলা এবং বদহজম হতে পারে।
এগুলো হলো বাইলের অস্বাভাবিকতার কিছু সাধারণ কারণ ও প্রভাব।
বাইল এর কাজ লিখ?
বাইল বা পিত্ত রসের কাজগুলো হলো:
1. চর্বি হজমে সহায়তা: বাইল রস চর্বিকে ছোট ছোট ফোঁটায় ভেঙে দেয় (এমালসিফিকেশন), যা ফ্যাট-ডাইজেস্টিং এনজাইম লিপেজের জন্য চর্বি ভাঙা সহজ করে।
2. ফ্যাট শোষণ: বাইল সল্ট চর্বির ভগ্নাংশকে (ফ্যাটি অ্যাসিড, মনোগ্লিসারাইড) শরীরের অন্ত্রের প্রাচীরের মাধ্যমে শোষিত করতে সহায়তা করে।
3. কোলেস্টেরল অপসারণ: বাইলের মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল এবং বিলিরুবিন অপসারণ হয়, যা লিভার থেকে বেরিয়ে আসে।
4. বর্জ্য অপসারণ: বাইলের মাধ্যমে হিমোগ্লোবিনের ভাঙনজাত পদার্থ, বিলিরুবিন এবং অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে অপসারিত হয়।
5. অ্যাসিডের নিরপেক্ষকরণ: বাইল রস পাচনতন্ত্রের অ্যাসিডিটি কমিয়ে আলকালাইন পরিবেশ তৈরি করে, যা পাচক এনজাইমগুলোর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
এই কার্যক্রমগুলো পাচনতন্ত্রের সুষ্ঠু কার্যক্রম এবং পুষ্টি শোষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পেঁপে কিভাবে বাইল কে সংশোধন করে?
পেঁপে (পাকা এবং কাঁচা দুইই) লিভার এবং গলব্লাডারের কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে বাইল সংশোধনে। পেঁপের মধ্যে উপস্থিত এনজাইম, বিশেষত প্যাপেইন, হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং বাইলের সঠিক প্রবাহ বজায় রাখতে সহায়তা করে। বাইল লিভার থেকে নিঃসৃত হয় এবং গলব্লাডারে সঞ্চিত থাকে, যা পরিপাক ক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পেঁপের পুষ্টিগুণগুলো বাইল সংশোধনে যেভাবে কাজ করে:
1. প্যাপেইন এনজাইম: হজমে সহায়ক এবং ফ্যাট ভাঙতে সহায়তা করে, যার ফলে বাইলের উপর চাপ কমে।
2. ফাইবার সমৃদ্ধ: পেঁপে ফাইবারে সমৃদ্ধ যা অন্ত্রের গতিশীলতা উন্নত করে এবং হজমে সহায়তা করে। এটি লিভার এবং গলব্লাডারের উপর চাপ কমায় এবং বাইল সংশোধন প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
3. ডিটক্সিফিকেশন: পেঁপে লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সহায়তা করে, যা বাইলের উৎপাদন এবং প্রবাহ উন্নত করতে সহায়ক হয়।
4. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: পেঁপেতে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাইল সংশোধন এবং লিভারের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
সুতরাং, পেঁপে নিয়মিত খেলে বাইল সংশোধন এবং লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারে।
পেঁপের কাঁচা পাতা বাইল সংশোধনী করে কিভাবে?
পেঁপের কাঁচা পাতা প্রাকৃতিকভাবে বাইল সংশোধনে সহায়ক হতে পারে। বিশেষ করে, পেঁপের পাতায় এমন কিছু সক্রিয় উপাদান থাকে যা লিভার এবং গলব্লাডারের কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
পেঁপের কাঁচা পাতার বাইল সংশোধনীতে ভূমিকা:
1. কার্পেইন এলকালয়েড: পেঁপের পাতায় উপস্থিত "কার্পেইন" নামে এক ধরনের এলকালয়েড থাকে যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। এটি গলব্লাডারের বাইল প্রবাহ সঠিক রাখতে সহায়তা করতে পারে, যা চর্বি ভাঙার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
2. ডিটক্সিফাইং এফেক্ট: পেঁপের পাতার রস লিভারের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ালে বাইল উৎপাদন এবং সংশোধন ভালোভাবে হয়।
3. অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রভাব: পেঁপের পাতায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান লিভার এবং গলব্লাডারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে, যা বাইল প্রবাহের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
4. হজম শক্তি বৃদ্ধি: পেঁপের পাতায় উপস্থিত এনজাইম হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, যার ফলে ফ্যাট ভাঙার প্রক্রিয়া দ্রুত হয় এবং বাইল প্রবাহ সঠিক থাকে।
5. ডায়রেটিক প্রভাব: পেঁপের পাতার একটি হালকা ডায়রেটিক প্রভাব রয়েছে, যা শরীরের অতিরিক্ত তরল বের করতে সাহায্য করে এবং লিভার ও গলব্লাডারের কাজ সহজতর করে।
ব্যবহার:
পেঁপের কাঁচা পাতার রস অথবা চা অনেক সময় বাইল সংশোধনে ব্যবহৃত হয়। পাতাগুলো গরম পানিতে ফুটিয়ে চা বানিয়ে পান করা যায়, অথবা পাতা চিবিয়ে খেলে এর উপকার পাওয়া যায়। তবে বড় মাত্রায় ব্যবহার করলে এটি কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তাই ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
কাঁচা পেঁপের জুস এর রেসিপি
কাঁচা পেঁপের জুস তৈরির রেসিপি খুব সহজ। নিচে একটি সিম্পল রেসিপি দেওয়া হলো:
কাঁচা পেঁপের জুসের রেসিপি
উপকরণ:
১টি কাঁচা পেঁপে
১-২ টেবিল চামচ চিনি (স্বাদ অনুযায়ী)
১টি লেবুর রস (স্বাদ অনুযায়ী)
এক চিমটি লবণ (ঐচ্ছিক)
২ কাপ পানি
প্রস্তুতির পদ্ধতি:
1. পেঁপে প্রস্তুত করুন: প্রথমে কাঁচা পেঁপে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এরপর পেঁপে খোসা ছাড়িয়ে, বীজগুলো বের করে টুকরো করে কাটুন।
2. মিশ্রণ তৈরি করুন: একটি ব্লেন্ডারে কাটা কাঁচা পেঁপে, চিনি, লেবুর রস, লবণ (যদি ব্যবহার করেন) এবং ২ কাপ পানি দিন।
3. ব্লেন্ড করুন: সব উপকরণগুলো ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন যতক্ষণ না মিশ্রণটি একদম স্মুদ এবং ঘন হয়।
4. ছেঁকে নিন (ঐচ্ছিক): যদি আপনি জুসের টেক্সচার পাতলা করতে চান, তাহলে মিশ্রণটি একটি ছাঁকনিতে ফেলে ছেঁকে নিন।
5. পান করুন: প্রস্তুত জুস গ্লাসে ঢেলে বরফের টুকরা দিয়ে পরিবেশন করুন।
টিপস:
স্বাদ বাড়ানোর জন্য মধু বা আদার রসও ব্যবহার করতে পারেন।
জুসটিকে আরও স্বাস্থ্যকর করার জন্য কিছু পুদিনা পাতা যোগ করতে পারেন।
এখন আপনার কাঁচা পেঁপের জুস প্রস্তুত! উপভোগ করুন!
লিভার, গলব্লাডার, গলব্লাডার বাইল কে ডিটক্সিফাই করার জন্য কোন ধরনের খাবার খাওয়া উচিত?
লিভার, গলব্লাডার, এবং বাইলকে ডিটক্সিফাই করার জন্য কিছু বিশেষ খাবার খাওয়া খুবই উপকারী। এই খাবারগুলি লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, গলব্লাডারের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখে এবং বাইলের উৎপাদনকে উন্নত করে। নিচে কিছু প্রস্তাবিত খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:
১. সিট্রাস ফল
লেবু, কমলা, এবং আঙ্গুর: এই ফলগুলিতে ভিটামিন সি রয়েছে, যা লিভারের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া বাড়ায় এবং বাইল উৎপাদনকে ত্বরান্বিত করে।
২. সবুজ পাতা
পালং শাক, সরিষা শাক, এবং কাঁচা পেঁপে পাতা: এগুলি লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
৩. বিট এবং গাজর
বিট: বিট লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক এবং গলব্লাডারকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
গাজর: গাজরে বিটা-ক্যারোটিন এবং ফাইবার থাকে, যা লিভারকে সুরক্ষা দেয়।
৪. বাদাম এবং বীজ
বাদাম (বিশেষ করে আখরোট) এবং চিয়া বীজ: এরা স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ভিটামিন ই সরবরাহ করে, যা লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক।
৫. ভেষজ এবং মশলা
আদা এবং রসুন: এগুলি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রাখে, যা লিভার পরিষ্কার করতে সহায়ক।
হলুদ: হলুদে কুর্কুমিন থাকে, যা লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
৬. জল এবং জুস
পর্যাপ্ত জল: শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে জল গুরুত্বপূর্ণ।
জুস: গাজর, বিট, এবং আপেল দিয়ে তৈরি জুস লিভারের জন্য খুবই উপকারী।
৭. স্বাস্থ্যকর চর্বি
অলিভ অয়েল এবং কোকোনাট অয়েল: এই তেলগুলি স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎস, যা গলব্লাডারের কার্যক্রম সমর্থন করে।
৮. প্রোবায়োটিকস
দই এবং কেফির: এগুলি অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক এবং লিভার ও গলব্লাডারের কার্যক্রমে সাহায্য করে।
৯. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
ওটস, ডাল, এবং সবজি: ফাইবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং লিভার ডিটক্সিফিকেশনকে সমর্থন করে।
১০. অ্যালকোহল ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো
অ্যালকোহল এবং ফাস্ট ফুড: এই খাবারগুলি লিভার এবং গলব্লাডারের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।
এই খাবারগুলি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে লিভার, গলব্লাডার এবং বাইলের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করবে।
-- ডাঃ কাজী সাইফ উদ্দীন আহমেদ
বি এস সি(বায়োকেমিস্ট্রি), ঢা.বি,
ডি এইচ এম এস (বোর্ড স্ট্যান্ড), ঢাকা
প্রভাষক,
ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ।
আমাদের লেখার কোন অংশ রেফারেন্স ছাড়া কপি বা শেয়ার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ।
>Share by:
Make a comments as guest/by name or from your facebook:
Make a comment by facebook: