মূত্রথলির প্রদাহ (Cystitis), ৩য় বর্ষ, প্রাকটিস অব মেডিসিন, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল এডুকেশন কাউন্সিল।

মূত্রথলির প্রদাহ (Cystitis) 


মূত্রথলির প্রদাহ (Cystitis) বা প্রস্রাবে সংক্রমণ একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা সাধারণত মূত্রথলিতে সংক্রমণ ঘটে। এটি মূলত ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকে সৃষ্টি হয়।

কী ও অন্যান্য নাম :

মূত্রথলির প্রদাহ মূলত "সিস্টাইটিস" নামেও পরিচিত। এটি সাধারণত নিম্ন মূত্রনালীতে ঘটে, যা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা সংক্ষেপে ইউটিআই (UTI) নামে পরিচিত।

আবিষ্কার ও ইতিহাস :

মূত্রথলির প্রদাহের ধারণা এবং চিকিৎসার পদ্ধতি প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত, কিন্তু সংক্রমণের সঠিক কারণ ও জীবাণুগুলো সম্পর্কে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে মাইক্রোস্কোপ ও জীবাণুবিদ্যার বিকাশের মাধ্যমে জানা যায়। ইউরিনারি সিস্টেমের সংক্রমণ প্রথমে ইস্কেরিশিয়া কোলাই (E. coli) ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘটে বলে প্রমাণিত হয়।

কারণসমূহ :

১. ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ: প্রায় ৮০-৯০% ক্ষেত্রে E. coli ব্যাকটেরিয়া মূত্রথলিতে প্রবেশ করে সংক্রমণ সৃষ্টি করে। 
২. স্বাস্থ্যবিধির অভাব: প্রস্রাবের পর পরিষ্কার না করা। 
৩. প্রস্রাব বেশিক্ষণ ধরে রাখা: এতে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়। 
৪. শারীরিক গঠনের কারণে: নারীদের ইউরেথ্রা ছোট এবং মলদ্বারের কাছে অবস্থিত হওয়ায় নারীরা তুলনামূলক বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
৫. যৌনমিলনের পর পরিষ্কার না হওয়া: যৌনমিলনের সময় ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করতে পারে। 
৬. ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা: যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের ইউটিআই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

প্রকারভেদ :

১. আকিউট সিস্টাইটিস: হঠাৎ করে সৃষ্টি হয় ও সাধারণত কয়েকদিন স্থায়ী হয়। 

২. ক্রনিক সিস্টাইটিস: দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং বারবার হতে পারে।

 ৩. ইন্টারস্টিশিয়াল সিস্টাইটিস (IC): এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান যেখানে মূত্রথলির সংক্রমণ না থাকলেও প্রদাহ ও ব্যথা দেখা দেয়।

 ৪. হেমোরেজিক সিস্টাইটিস: এখানে প্রস্রাবে রক্ত দেখা দিতে পারে এবং তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।

লক্ষণাবলী :

১. প্রস্রাবের সময় ব্যথা: মূত্রথলিতে জ্বালা ও ব্যথা।

২. প্রস্রাব ঘন ঘন হওয়া: প্রতি ঘন্টায় প্রস্রাবের তাগিদ অনুভব করা।
৩. প্রস্রাবে দুর্গন্ধ: সংক্রমণজনিত দুর্গন্ধ দেখা দিতে পারে। 

৪. তলপেটে চাপ বা ব্যথা: সংক্রমণের কারণে তলপেটে ব্যথা হতে পারে।

 ৫. প্রস্রাবে রক্ত: কিছু ক্ষেত্রে প্রস্রাবে রক্ত আসতে পারে। 

৬. জ্বর বা কাঁপুনি: সংক্রমণ গুরুতর হলে জ্বর আসতে পারে।

ইনভেস্টিগেশন :

১. ইউরিন টেস্ট: ইউরিন টেস্টের মাধ্যমে প্রস্রাবে সংক্রমণ আছে কি না, তা নির্ণয় করা যায়। 

২. ইউরিন কালচার: এতে ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতি নির্ধারণ করা যায় এবং সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক নির্বাচন করা যায়।

 ৩. আল্ট্রাসাউন্ড বা CT স্ক্যান: কিডনি বা মূত্রনালীতে কোন সমস্যা আছে কি না তা দেখতে করা হয়।

৪. সিস্টোস্কপি: কিছু জটিল ক্ষেত্রে মূত্রথলির অবস্থা জানতে করা হয়।

জটিলতা :

১. পায়েলোনেফ্রাইটিস: কিডনিতে সংক্রমণ হলে তা গুরুতর রূপ নিতে পারে। 

২. ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স: প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন। 

৩. রেনাল ফেইলিওর: দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণে কিডনি বিকল হতে পারে। 

৪. প্রস্টেট গ্রন্থিতে প্রদাহ (পুরুষদের ক্ষেত্রে): এটি প্রদাহ বা সংক্রমণের কারণ হতে পারে।

ভবিষ্যৎফল :

যদি সময়মতো চিকিৎসা করা না হয়, মূত্রথলির প্রদাহ কিডনি পর্যন্ত ছড়িয়ে বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে সঠিক ও সময়মতো চিকিৎসা করলে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব।

প্রতিরোধের উপায় :

১. পর্যাপ্ত পানি পান করা: এটি মূত্রাশয়কে ধুয়ে দেয় ও ব্যাকটেরিয়া বের করে দেয়। 

২. প্রস্রাব বেশি সময় আটকে না রাখা: সময়মতো প্রস্রাব করা। 

৩. ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা: প্রস্রাবের পর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রাখা।

4. সঠিক খাদ্যাভ্যাস: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে ইউরিনের পিএইচ লেভেল বৃদ্ধি পায়, যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে পারে।

ঘরোয়া চিকিৎসা :

১. পানি পান করা: পর্যাপ্ত পানি পান করলে ব্যাকটেরিয়া মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। 

২. ক্র্যানবেরি জুস: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে এটি ব্যাকটেরিয়া রোধে সাহায্য করতে পারে। 

৩. গরম পানির প্যাড: তলপেটে গরম পানির প্যাড রাখলে আরাম পাওয়া যায়।


চিকিৎসার উপায় :( এলোপাথি) 

১. অ্যান্টিবায়োটিক: Amoxicillin, Ciprofloxacin, Nitrofurantoin, ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়, তবে ডাক্তার যে অ্যান্টিবায়োটিকটি সঠিক মনে করেন, সেটি ব্যবহার করতে হবে। 

২. ব্যথানাশক ওষুধ: পেইন কিলার ব্যবহার করা যেতে পারে ব্যথা কমানোর জন্য। 

৩. মূত্রে অ্যালকালাইজিং এজেন্ট: এটি প্রস্রাবে অম্লতা কমিয়ে জ্বালা ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন :

১. লক্ষণগুলি যদি ২৪-৪৮ ঘন্টায় উপশম না হয়। 
২. প্রস্রাবে রক্ত দেখা দিলে। 
৩. দীর্ঘদিন ধরে একই লক্ষণ থাকলে। 
৪. তীব্র জ্বর বা ব্যথা হলে।

খাদ্যাভ্যাস:

খাবার যা খেতে পারবেন: 

১. পর্যাপ্ত পানি প্রচুর পানি পান করলে মূত্রের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা মূত্রথলির ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে সহায়ক হতে পারে।
২. শাক-সবজি ও ফলমূল, বিশেষত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার

খাবার যা এড়াতে হবে: 

১. ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় (যেমন চা, কফি)।
 ২. মসলাযুক্ত খাবার। 
৩. অতিরিক্ত মিষ্টি বা শর্করা যুক্ত খাবার।

সঠিক জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিয়ে মূত্রথলির প্রদাহ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।


হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্রে মূত্রথলির প্রদাহ বা সিস্টাইটিসের :

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্রে মূত্রথলির প্রদাহ বা সিস্টাইটিসের জন্য বিভিন্ন ঔষধ ও দর্শন রয়েছে।

হোমিওপ্যাথিতে রোগীর শারীরিক ও মানসিক উপসর্গ,  বংশগত, অতীত রোগের ভোগকাল  এবং রোগীর ব্যক্তি কেন্দ্রিক লক্ষণাবলী বিশ্লেষণ করে চিকিৎসা দেওয়া হয়, যা রোগীর ব্যক্তিত্ব, শারীরিক অবস্থা এবং মানসিক পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়।

মূত্রথলির প্রদাহের জন্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা  :

১. ক্যানথারিস (Cantharis)

প্রধানত মূত্রথলির প্রদাহ, ব্যথা, জ্বালাপোড়া ও তীব্র তৃষ্ণা সহ অন্যান্য উপসর্গে ব্যবহার করা হয়।

সাধারণত তীব্র ও তীক্ষ্ণ জ্বালাপোড়ার জন্য এটি প্রযোজ্য।

রোগী প্রায়শই প্রস্রাবের জন্য তাগিদ অনুভব করে, কিন্তু প্রস্রাব করার সময় খুব ব্যথা ও জ্বালা অনুভব করে।


২. সার্সাপারিলা (Sarsaparilla)

প্রস্রাবের শেষের দিকে ব্যথা বেশি হলে এটি কার্যকর।

রোগীর মূত্রে পিচ্ছিল বা দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ থাকতে পারে এবং তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।


3. নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid)

এই ওষুধটি সাধারণত তখন ব্যবহার করা হয় যখন প্রস্রাবে রক্ত দেখা যায় এবং প্রচণ্ড ব্যথা হয়।

রোগী যদি প্রস্রাব করার সময় ধারালো, কাটার মতো ব্যথা অনুভব করে, তবে এই ওষুধটি কার্যকরী।



4. বারবারিস ভ্যালগারিস (Berberis vulgaris)

যদি মূত্রথলির প্রদাহ কিডনির সংক্রমণ পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় তবে এটি কার্যকর।

প্রস্রাবের সময় ব্যথা তলপেট থেকে কিডনির দিকে যায় এবং প্রস্রাবে কাঁপুনি অনুভব হয়।



5. পালসাটিলা (Pulsatilla)

এটি সাধারণত নারীদের মধ্যে সংক্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

রোগী যদি খুব সংবেদনশীল এবং আবেগপ্রবণ হয়, এবং ঠান্ডা বা মিষ্টি খাবারে সমস্যা হয় তবে এটি কার্যকর।



6. স্ট্যাফিসেগ্রিয়া (Staphysagria)

যদি সংক্রমণ বেশি প্রস্রাব আটকানো বা রাগের কারণে হয়, তবে এটি কার্যকর।

বিশেষত, যৌন সংক্রান্ত কারণে হওয়া মূত্রথলির প্রদাহে এটি উপকারী।

কেন্ট রেপার্টরিতে "মূত্রথলির প্রদাহ" অর্থাৎ "সিস্টাইটিস" কে "ব্লাডার - ইনফ্লামেশন" রুব্রিক নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

Kent [ Bladder ] Inflammation -------(71)

Bladder,

INFLAMMATION Acon., all-c., am-c., ant-t.Apis.arg-n.arn.ars.aspar., bar-m.Bell.berb.cact., calad.calc.camph., cann-i.cann-s., Canth.caps.carb-ac., caust.chim.chin-s.colch., coloc., con.cop.cub.dig.dulc.Equis.ery-a.eup-per.ferr-p., gels.hell.hydr.hyos.kali-ar., kali-bi., kali-c., kali-chl., Lach., lil-t., lith., Lyc.med.merc-c.merc.nit-ac.nux-v.pareir., petr., ph-ac., pop-t., prun-s., Puls.rhus-t.sabin.Sars., senec., seneg., Sep., squil., stram., sulph.tarent., Ter., thuj., verat-v. ---(71)

cold, from taking Dulc.sulph.

injuries, after : Arn.staph.

pus like discharge after lithotomy, with : Mill.

scarlatina, after : Canth.

suppression of menses or hæmorrhoidal flow, after : Nux-v.

violent pain and almost clear blood, with : Nit-ac.

Neck : Apis.aspar., caps.chim.clem.cop.dig.elat., hyos., merc-c.merc-i-r.nux-v.petros.puls.senec.





হোমিওপ্যাথিক দর্শন ও দার্শনিক মতামত :

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা মূলত তিনটি দর্শনের উপর ভিত্তি করে করা হয়:

1. সিমিলিয়া সিমিলিবাস কিউরেন্টার (Similia Similibus Curentur): 
এই নীতিটি "যে বস্তু রোগের উপসর্গ সৃষ্টি করে, সেই বস্তুই রোগ সারাতে সহায়ক" ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি। মূত্রথলির প্রদাহের ক্ষেত্রে এমন ঔষধ ব্যবহার করা হয় যা উক্ত লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে।


2. হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচ: 
হোমিওপ্যাথি রোগীর সম্পূর্ণ মানসিক ও শারীরিক অবস্থাকে একসঙ্গে দেখে। রোগীকে তার মানসিক ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ঔষধ দেওয়া হয়, যেমন: রাগ, বিষণ্ণতা, আবেগপ্রবণতা বা অতিরিক্ত উদ্বেগ।


3. প্রমাণিকরণ (Proving): 
হোমিওপ্যাথিক ঔষধ তৈরি করার আগে বিভিন্ন প্রমাণিকরণ পরীক্ষা করা হয়, যা সুস্থ ব্যক্তির উপর বিভিন্ন পদার্থ প্রয়োগ করে করা হয়। এটি ঔষধের কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করে।


বিখ্যাত হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারদের মতামত :

1. স্যামুয়েল হ্যানিম্যান: 

হোমিওপ্যাথির প্রবর্তক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান মনে করতেন যে রোগ সারাতে রোগীর দেহ ও মনের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করতে হবে এবং প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। মূত্রথলির প্রদাহের ক্ষেত্রে তিনি রোগীর সম্পূর্ণ অবস্থার বিশ্লেষণ করে চিকিত্সা দিতেন।


2. ড. জেমস টেলর কেন্ট: 

হোমিওপ্যাথির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ড. জেমস টেলর কেন্ট রোগকে তিনটি স্তরে বিভক্ত করেছিলেন - শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক। মূত্রথলির প্রদাহের ক্ষেত্রে, তিনি রোগীর মানসিক অবস্থাকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতেন।


3. ড. ক্লার্ক

ড. ক্লার্ক মনে করতেন যে হোমিওপ্যাথি হল একটি প্রাকৃতিক উপায়ে রোগ নিরাময়ের পদ্ধতি। তিনি রোগের কারণ অনুসন্ধান করতেন এবং চিকিৎসা সেই কারণ অনুযায়ী নির্ধারণ করতেন। মূত্রথলির প্রদাহের ক্ষেত্রে তিনি রোগীর দেহের সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করতেন।


4. ড. হেরিং

ড. হেরিং বিশ্বাস করতেন যে রোগীর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ঔষধ নির্বাচন করতে হলে শরীরের পুরো ইতিহাস জানা প্রয়োজন।



হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার সুবিধা :

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন হওয়ায় এটি রোগীকে আরাম দেয় এবং ধীরে ধীরে মূল সমস্যার সমাধান করে। এটি রোগীর দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে।

চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ :

হোমিওপ্যাথি একটি গভীর ও সমন্বিত পদ্ধতি হওয়ায় রোগীর ব্যক্তিগত ও মানসিক উপসর্গগুলো বোঝার জন্য অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

++++++
নোট : হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের অবশ্যই এলোপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবহৃত ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সমূহ জানিতে হইবে কারণ রোগী এলোপ্যাথি চিকিৎসা কালে দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ সেবন করে থাকেন, ফলে রোগী দেহে এলোপ্যাথিক ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো পরিলক্ষিত হয়। 
+++++


মূত্রথলির প্রদাহের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা :

এলোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে মূত্রথলির প্রদাহ (Cystitis) এর চিকিৎসা মূলত সংক্রমণ দূর করা এবং ব্যথা উপশমের উপর ভিত্তি করে করা হয়। 

এখানে মূলত অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক, ও অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে রোগীর আরাম এবং সংক্রমণ দূর করা হয়।

মূত্রথলির প্রদাহের চিকিৎসা পদ্ধতি (এলোপ্যাথিক)

1. অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি

মূত্রথলির প্রদাহের প্রধান কারণ হলো ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ। সাধারণত চিকিৎসকরা সংক্রমণের তীব্রতার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। 

যেমন:

Nitrofurantoin: মূত্রনালীর সংক্রমণের জন্য সাধারণত প্রথম পছন্দ।

Trimethoprim/Sulfamethoxazole (TMP-SMX): এই অ্যান্টিবায়োটিক সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে, তবে কিছু ব্যাকটেরিয়া এর প্রতি প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে।

Fosfomycin: মূত্রনালীর সংক্রমণ নিরাময়ে কার্যকর একটি ওষুধ।

 Ciprofloxacin, Levofloxacin (Fluoroquinolones): জটিল সংক্রমণ বা কিডনির সংক্রমণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।


অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের সময়কাল:

সহজ সংক্রমণের ক্ষেত্রে সাধারণত ৩-৫ দিনের অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স।

জটিল সংক্রমণ বা বারবার সংক্রমণ ঘটলে চিকিৎসার সময়কাল বাড়তে পারে।


2. ব্যথানাশক ওষুধ মূত্রথলির প্রদাহের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সময় ব্যথা ও জ্বালা হতে পারে। ব্যথা উপশমের জন্য প্রায়ই নিম্নলিখিত ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া হয়:

Phenazopyridine: এটি প্রস্রাবের জ্বালা ও ব্যথা উপশম করে। এটি সংক্রমণ সারায় না, তবে উপসর্গগুলো উপশমে সহায়ক।

Ibuprofen বা Paracetamol: ব্যথা কমাতে এবং প্রদাহ প্রশমন করতে কার্যকর।

নোট : "অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ এর গভীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া" লেখা টি পড়ে দেখুন। 

নোট : অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের সাইড ইফেক্ট এর রূপান্তরিত রূপ হলো  kidneys Disease বিস্তারিত আলোচনাটি পড়ে দেখুন ।


4. প্রোবায়োটিক 
প্রোবায়োটিক যেমন Lactobacillus ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করলে মূত্রনালীতে ভালো ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া বেড়ে ওঠা কমে।

5. ইমিউনোথেরাপি যারা বারবার মূত্রথলির প্রদাহে আক্রান্ত হন তাদের জন্য ইমিউনোথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।


এখন আপনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন আপনি কোন প্যাথিতে চিকিৎসা গ্রহণ করিবেন না হোমিওপ্যাথি না  এলোপ্যাথি। অতএব চিকিৎসা দায়ভার সম্পূর্ণ আপনার। 



-----কাজী সাইফ উদদীন আহমেদ। 
>Share by:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন


Make a comments as guest/by name or from your facebook:


Make a comment by facebook:
নবীনতর পূর্বতন