যেখানে একজন সুস্থ মানুষ ধীরে ধীরে বা হঠাৎ করে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ‘পাগল’ হয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়।
আমি আলোচনা করব মানব-মনের গঠন, আধুনিক মনোবিজ্ঞান, দার্শনিক পর্যালোচনা, এবং শেষে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দর্শন—সবকিছু এক সুতোয় গাঁথা থাকবে।
১. মানব-মনের গভীর কাঠামো ও বিকৃতি (Structure and Collapse of the Mind):
ফ্রয়েডীয় বিশ্লেষণ অনুযায়ী:মানব-মন ৩টি স্তরে গঠিত:
Id: জৈবিক, আদিম চাহিদা ও প্রবৃত্তি।Ego: বাস্তবতা ও যুক্তিবোধ।Superego: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও আদর্শ।
যখন কোনো গভীর মানসিক সংঘাত ঘটে—যেমন আত্ম-অসন্তোষ, সামাজিক প্রত্যাখ্যান, গোপন অপরাধবোধ—তখন ইগো (Ego) চাপ সামলাতে না পেরে ভেঙে পড়ে, এবং তখন মানুষ বাস্তবতা থেকে বিচ্যুত হয়ে কল্পনার জগতে চলে যায়। একে বলে Psychotic Break।
উদাহরণ:
একজন মানুষ সারাজীবন চেষ্টা করেও পারিবারিক বা সামাজিক স্বীকৃতি পেল না—ভেতরে এক দহন চলতে থাকে, যার বহিঃপ্রকাশ হতে পারে বিকৃত আচরণ, ভয়, হ্যালুসিনেশন, এমনকি নগ্ন হয়ে রাস্তায় ঘোরা।
২. বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা (Scientific Perspective):
মানসিক বিকার বা "পাগলামি" (Psychosis/Schizophrenia) এর পেছনে থাকে কয়েকটি প্রধান কারণ:
ক) জৈবিক (Biological) কারণ:
মস্তিষ্কে ডোপামিন ও সেরোটোনিন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।পারিবারিক বা বংশগত মানসিক রোগের ইতিহাস।মাথায় আঘাত বা নিউরোলজিক্যাল সমস্যার প্রভাব।
খ) মানসিক (Psychological) কারণ:
দীর্ঘস্থায়ী চাপ, হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব।শৈশব বা অতীতে কোনো ট্রমা বা মানসিক আঘাত।
গ) পরিবেশগত (Environmental) কারণ:
সামাজিক বঞ্চনা, প্রেমে ব্যর্থতা, পারিবারিক অশান্তি।
নেশাগ্রস্ততা (মাদক, এলকোহল)।
৩. দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি (Philosophical Viewpoint):
দার্শনিকভাবে মানুষ একটি জটিল চেতনা-সম্পন্ন সত্তা। যখন এই চেতনার ভারসাম্য হারায়, তখন মানুষ বাস্তবতা ও কল্পনার মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না।নৈরাশ্যবাদ (Existentialism) অনুযায়ী, জীবনের উদ্দেশ্য হারিয়ে ফেলার অনুভূতি মানুষকে মানসিক ভাঙনের দিকে ঠেলে দেয়।ঈশ্বর ও আত্মার প্রশ্ন: কেউ কেউ অতিমাত্রায় ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক চিন্তায় ডুবে গিয়ে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।সমাজ ও মূল্যবোধের পতন: সমাজের অবজ্ঞা, অবহেলা, ও বিচ্ছিন্নতা মানসিক সুস্থতাকে নষ্ট করতে পারে।
৪. দার্শনিক আলোচনার স্তর (Philosophical Dimensions):
ক) Nietzsche বলেছিলেন:
> "He who fights with monsters should be careful lest he thereby become a monster."
যার মানে: আপনি যদি জীবনে সবসময় সংগ্রাম করতে করতে থাকেন, তাহলে নিজেই এক সময় বিকৃত হয়ে যেতে পারেন।
খ) Jean-Paul Sartre ও আত্মপরিচয়ের সংকট (Identity Crisis):
মানুষ তার জীবনের উদ্দেশ্য হারিয়ে ফেলে। চারপাশের সমাজ তাকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করে, সে যদি সেটিকে মেনে নিতে না পারে—তাহলে এক গভীর পরিচয় সংকটে পড়ে। তখন মানসিক ভারসাম্য হারানো স্বাভাবিক।
গ) ভিক্ষুক বা ‘পাগল’ বলে আমরা যাকে দেখি, সে কি আসলেই পাগল?
অনেক দার্শনিক বলেন, সমাজ যার কথা শুনতে চায় না, তাকেই “পাগল” তকমা দেয়। অনেক পাগল আসলে সমাজ-ব্যবস্থার প্রতি প্রতিবাদী এক মূর্ত রূপ।
৫. হোমিওপ্যাথিক দৃষ্টিকোণ (Homeopathic Philosophy of Madness):
হোমিওপ্যাথিতে রোগ শুধুই শারীরিক নয়, বরং এটি "সমগ্র জীবসত্তার ভারসাম্যহীনতা"। মানসিক রোগকে হোমিওপ্যাথি বিশ্লেষণ করে তিনটি পর্যায়ে:
ক) Mental Level:
ভুল চিন্তা, কল্পনা, ভয়, রাগ, অবসাদ, দ্বৈততা।যেমন: "আমি ঈশ্বর", বা "সবাই আমাকে মারতে চায়"।
খ) Emotional Level:
ভালোবাসাহীনতা, স্বীকৃতির অভাব, তুচ্ছতা বোধ।
গ) Physical Expression:
নগ্ন হয়ে ঘোরা, নিজেকে আঘাত করা, চিৎকার, কথা বলা বন্ধ করে দেওয়া।
গুরুত্বপূর্ণ হোমিওপ্যাথিক প্রতিকারের গভীর ব্যাখ্যা:
1. Stramonium:
মানসিক অন্ধকার ভয় (Darkness phobia)।আলো ছাড়া ঘুমায় না, সহিংস স্বভাব, অতীত ট্রমা থেকে সিজোফ্রেনিয়া টাইপ রোগ।
2. Anacardium Orientale:
দ্বৈত চেতনা (Feels like there are two wills inside).
একদিকে ভালো কাজ করতে চায়, অন্যদিকে অপরাধ প্রবণতা।
3. Hyoscyamus Niger:
সন্দেহ, যৌন উন্মাদনা, সবসময় হাসে বা নগ্ন হয়।
হিংসা ও সামাজিক লজ্জাহীনতা।
4. Veratrum Album:
নিজেকে রাজা ভাবে, ধর্মীয় ভ্রান্তি (delusion of grandeur)।
সমাজে অপমানিত হওয়ার পর মানসিক পতন ঘটে।
5. Aurum Metallicum:
আত্মহত্যার প্রবণতা, জীবনে ব্যর্থতা, গভীর গ্লানি।
মনে হয় জীবনের আর কোনো মানে নেই।
৬. Lachesis:
অতিরিক্ত কথা বলা, ঈর্ষা, সন্দেহ।
নিজেকে বড় ভাবা, অধৈর্য।
৭. Belladonna:
আকস্মিক মানসিক অস্থিরতা ও উত্তেজনা।
হ্যালুসিনেশন ও চিৎকার।
৬. চিকিৎসা কৌশল:
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় কেবল ওষুধই নয়, রোগীর সাথে গভীরভাবে কথা বলা, তার জীবনের অতীত, স্বপ্ন, ভয়, দুঃখ, এবং আশাভঙ্গ বোঝার প্রয়োজন হয়। এই প্রক্রিয়াকে বলে "Case Taking with Soul Reading"।
এই ধরনের মানসিক অবস্থার চিকিৎসা শুধু ওষুধ দিয়ে নয়; একজন রোগীর পূর্ণ মানসিক, পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যায়ন দরকার। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় রোগীকে পুরোপুরি বোঝার চেষ্টা করা হয়—তার অতীত, মানসিক চাপ, পরিবার ও জীবনের ব্যর্থতাগুলো পর্যন্ত।
চিকিৎসায় প্রয়োজন:
ধৈর্য,পর্যায়ক্রমে ওষুধ পরিবর্তন,উপযুক্ত Potency নির্বাচন,রোগীর মানসিক পরিবেশ ঠিক করা (Counseling),
উপসংহার:
একজন মানুষ পাগল হয়ে রাস্তায় ঘোরাফেরা করা শুধুমাত্র তার নয়, বরং সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার প্রতিফলন।
এটা চিকিৎসার বিষয়,
সহানুভূতির বিষয়,
একজন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর একটি সম্পূর্ণ হোমিওপ্যাথিক কেস টেকিং রিপোর্ট :এবং আমাদের অন্তরদৃষ্টি দিয়ে বোঝার বিষয়।
নিচে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর একটি সম্পূর্ণ হোমিওপ্যাথিক কেস টেকিং রিপোর্ট (Case Taking) উপস্থাপন করা হলো, যাতে রোগের লক্ষণসমূহ, তার মানসিক ইতিহাস, জীবনের ঘটনার প্রভাব এবং শেষ পর্যন্ত সম্ভাব্য ওষুধ নির্বাচন যুক্ত আছে।
হোমিওপ্যাথিক কেস টেকিং রিপোর্ট
রোগীর পরিচয়:
নাম: মো. কবয়স: ৩৫ বছরলিঙ্গ: পুরুষবৈবাহিক অবস্থা: অবিবাহিত।পেশা: পূর্বে দোকানের কর্মচারী ছিলেন, এখন বেকার।আগমন: পরিবার কর্তৃক আনা হয়েছে।বর্তমান অবস্থান: রাস্তায় ঘুরে বেড়ান, কখনো বাসায় আসেন না।
প্রধান অভিযোগ (Chief Complaints):
হঠাৎ করে উচ্চস্বরে হাসাহাসি করা।নিজের সাথে কথা বলা।অস্বাভাবিক কাপড় পরা (মধ্যে মধ্যে নগ্ন হয়ে ঘোরা)।সকলের প্রতি সন্দেহ ও রাগ।নিজের পরিবারকে চিনতে না পারা।মাঝে মাঝে চিৎকার করে ওঠা: “সবাই আমাকে মারতে চায়”।অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া।রাত জেগে থাকেন, চোখ লাল।কিছুতেই হাত দিতে দেন না; কাউকে কাছে আসতে দেন না।
মানসিক ইতিহাস (Mental History):
অভিবাবক বলেন,৩ বছর আগে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে গভীর হতাশায় পড়েন।তারপর থেকে আত্মমুল্যায়ন কমে যায়।মাঝে মাঝে বলেন: “আমি ব্যর্থ মানুষ”, “আমার বাঁচার দরকার নেই”।ধর্মীয় বিষয়ে অতিমাত্রায় কথা বলা শুরু করে: “আমি আল্লাহ দূত”, “সবাই পাপ করছে”।পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।সামাজিক আঘাত ও আত্মসম্মানের ক্ষয়।
শারীরিক ইতিহাস:
ঘুম: খুব কমক্ষুধা: অনিয়মিততৃষ্ণা: মাঝারিপায়খানা/প্রস্রাব: স্বাভাবিকঅতীত অসুখ:মাথায় একবার আঘাত পেয়েছিলেন স্কুলজীবনে।
ব্যক্তিত্ব ও আচরণ (Personality Traits):
অভিবাবক বলেন,পূর্বে শান্ত স্বভাবের ছিলেন।আত্মমর্যাদাশীল ও দায়িত্বশীল।সমাজে ভালো ভাবমূর্তি ছিল।এখন দুর্বোধ্য, কারো কথা শুনতে চান না।মাঝে মাঝে পাথরের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন।
রোগের ধরন (Miasmatic Background):
সাইকোটিক + সিফিলিটিক (ভয়ংকর মানসিক বিপর্যয়, সমাজবিচ্ছিন্নতা, আত্মহননের ইচ্ছা)
Key Mental Symptoms (মাথায় রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ মানসিক লক্ষণ):
1. Delusion: মনে হয় সে ঈশ্বর / কেউ তাকে মারতে চায়।2. Suspicion: সবাইকে সন্দেহ করে।3. Religious Mania: ধর্মীয় উন্মাদনা।4. Nudity: নগ্ন হয়ে রাস্তায় ঘোরে।5. Violent Behavior: চিৎকার, মারধরের প্রবণতা।6. Talking to self: নিজে নিজে কথা বলে।7. Aversion to relatives: পরিবারকে চিনতে চায় না।8. Pride with insanity: নিজেকে মহান ভাবা।
Repertorization (লক্ষণ অনুসারে ওষুধ নির্বাচন):
লক্ষণ অনুসারে সম্ভাব্য ওষুধগুলো:
Stramonium,Hyoscyamus Niger,Veratrum Album,Belladonna,Anacardium Orientale,
প্রধান ওষুধ নির্বাচন করা হল:
Stramonium ০/২ – ৯ টি মাত্রা (single dose) কাপিং করে করে সেবন করিবেন।
দেওয়ার কারণ:
ধর্মীয় উন্মাদনা,অন্ধকার ভয়,সহিংসতা,কথা বলার ধরন বিকৃত,সবসময় চোখ বড় বড় করে তাকানো,হিংস্রতা ও চিৎকার,গভীর সাইকোসিস,
সহযোগী চিকিৎসা ও ব্যবস্থা:
1. প্রথমে চিন্তিত পরিবারকে কাউন্সেলিং দেওয়া জরুরি।2. রোগীর আশেপাশে সহনশীল পরিবেশ তৈরি।3. প্রয়োজনে হোমিওপ্যাথিকভাবে অ্যান্টিডোট বা অনুসারী ওষুধ ব্যবহার করা হবে (যেমন: Hyoscyamus যদি যৌনভ্রষ্টতা দেখা দেয়)।4. প্রতিমাসে কেস রিভিউ করা হবে এবং নতুন লক্ষণ অনুযায়ী পরবর্তী ওষুধ নির্ধারণ।
উপসংহার:
এই রোগীর ক্ষেত্রে মানসিক ভাঙনের মূল কারণ হলো:
প্রেমে ব্যর্থতা → আত্মসম্মানহানী → সামাজিক বিচ্ছিন্নতা → আত্ম-অহংকার → হ্যালুসিনেশন → পাগলামি।
হোমিওপ্যাথির লক্ষ্য হলো:
রোগীর মনের গভীর স্তরে পৌঁছে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা।ধৈর্যের সাথে ধাপে ধাপে পুনরুদ্ধার।
---
একজন মানসিক রোগীর চিকিৎসা ও উন্নতির জন্য ধারাবাহিক ফলোআপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে আমি একটি সুসংগঠিত মাসব্যাপী ফলোআপ দিচ্ছি, যা Stramonium ০/২ নয় মাত্রা দেয়ার পর শুরু করা হয়েছিল।
মানসিক রোগী - Stramonium ০/২ - ফলোআপ পরিকল্পনা (Follow-up Schedule)
প্রথম দিন (Day 0):
Stramonium ০/২ একমাত্রা,রোগীকে অযথা না বিরক্ত করার নির্দেশ,পরিবারকে বুঝানো হল : ওষুধ কাজ শুরু করতে সময় লাগবে।পর্যবেক্ষণ শুরু: লেখালেখি করে রাখতে হবে।
সপ্তাহভিত্তিক ফলোআপ:
সপ্তাহ ১ (Day 1–7):
খাবারের প্রতি আগ্রহ কিছুটা এসেছে কি?রোগী ঘুমাচ্ছে কি না, অতিরিক্ত উত্তেজনা কি কমেছে?
নিজে নিজে কথা বলার মাত্রা কি হ্রাস পাচ্ছে?সম্ভাব্য পরিবর্তন:ঘুমে সামান্য উন্নতি।
হিংস্রতা কিছুটা কম।
পরিবারকে ধীরে ধীরে চিনতে পারে।করণীয়:ওষুধ সেবন করা আরও দুই দিন বাকি। তাহা চলবে।কেবল পর্যবেক্ষণ,
শুধু এক্ষেত্রে, হিংস্রতা বেড়ে গেলে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হল।
সপ্তাহ ২ (Day 8–14):
আচরণে শৃঙ্খলা ফিরে আসছে কি?রাস্তায় যাওয়া কমছে কি?চোখের ভঙ্গিমা স্বাভাবিক কি না?সম্ভাব্য পরিবর্তন:অশান্তি করা কিছুটা কমছে,মাঝে মাঝে হ্যালুসিনেশন হবে, কিন্তু কম ঘনতায়,খাওয়ার অভ্যাসে উন্নতি হয়েছে।করণীয়:এখনো নতুন ডোজ নয়, অপেক্ষা করিতে হবে।ভালো লক্ষণ থাকলে কেবল পর্যবেক্ষণ করিতে হবে।কেবল অস্থিরতা বাড়লে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হল।
সপ্তাহ ৩ (Day 15–21):
সামাজিক যোগাযোগে আগ্রহ এসেছে কি?পরিবারের সঙ্গে কথা বলছে কি?বাস্তবতা ও কল্পনার মধ্যে পার্থক্য করতে পারছে কি?
সম্ভাব্য পরিবর্তন:
কথাবার্তা কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।নিজেকে সাজানো, পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সচেতনতা ফিরে এসেছে।
করণীয়:
লক্ষণ ভালো থাকলে কোনো নতুন ওষুধ নয়।তবে উদাসীনতা বেড়ে গেলে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হল।
সপ্তাহ ৪ (Day 22–30):
কি করছে, তার নিজস্ব উপলব্ধি হচ্ছে কি?নতুন করে কোনো দুঃখজনক কথা বলে কি?ধর্মীয় উন্মাদনা কী হ্রাস পেয়েছে?
সম্ভাব্য পরিবর্তন:
বাস্তবতার সাথে সংযোগ বৃদ্ধি পাছছে।আত্ম-সম্মান ফিরে আসা শুরু করেছে।চোখে শান্তি চিহ্ন দেখা যাছছে।
করণীয়:
যদি সবকিছু স্থিতিশীল থাকার কারনে, দ্বিতীয় মাসে কোনো ডোজ ছাড়া পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাওয়া শুরু করেছিলাম।কিন্তু ৭ দিন যেতে না যেতেই, পুনরায় Stramonium ০/৩ নয় মাত্রা দেওয়া হল।
বিশেষ নির্দেশনা পরিবারকে দিলাম:
1. রোগীকে কিছুতেই নিয়ে হাসাহাসি না করিতে বলিলাম।2. তাকে কথা বলতে দিন, বাধা দেবেন না।3. ধৈর্য ধরে নিজের ভালোবাসা জানানো।4. কারো সাথে যদি সম্পর্ক খারাপ না হয় (যেমন: মায়ের সাথে), সে সম্পর্কে যত্ন শীল হতে বলিলাম।
---
আমার (ডাক্তারের) কাজ (প্রতিমাসের শেষে):
Re-evaluation (আবার লক্ষণ সংগ্রহ)।নতুন কিছু আসছে কি না—যেমন: অন্য ভয়, নতুন উত্তেজনা।Need for repetition বা potency increase যাচাই।মিয়াজমেটিক প্রতিকার দরকার কি না (যেমন: Syphilinum)।
-- ডাঃ কাজী সাইফ উদ্দীন আহমেদ
বি এস সি(বায়োকেমিস্ট্রি), ঢা.বি,
ডি এইচ এম এস (বোর্ড স্ট্যান্ড), ঢাকা
প্রভাষক,
ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ।
আমাদের লেখার কোন অংশ রেফারেন্স ছাড়া কপি বা শেয়ার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ।
>Share by:
Make a comments as guest/by name or from your facebook:
Make a comment by facebook: