1. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা2. জীবাণু সংক্রমণ (ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস, ট্রাইকোমোনাস)3. প্রজনন অঙ্গের প্রদাহ বা ইনফেকশন (PID)4. অতিরিক্ত যৌন উত্তেজনা বা কল্পনা5. অপরিষ্কার যৌনাঙ্গ6. অতিরিক্ত মানসিক চাপ7. অ্যানিমিয়া বা অপুষ্টি8. মায়োমা বা ওভেরিয়ান সিস্ট9. জরায়ুর ক্ষত বা ঘা (cervical erosion)
i) ধাতুগত কারনে : স্ক্রফুলা বা গণ্ডমালা ধাতু এবং শ্লেষ্মাপ্রধান ধাতুকে ইহার পূর্ববর্তী কারণ হিসাবে গণ্য করা যায়।
ii) সংক্রমন রোগের কারনে :i) গণোরিয়া বা প্রমেহ রোগ, এর গণোরিয়া নামক ব্যকটেরিয়ার জীবাণু দ্বারা সার্ভিক্স, ভ্যাজাইনা আক্রান্ত হওয়ার কারনে।
ii) ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজাইনালিস নামক জীবাণু দ্বারা ভ্যাজাইনা আক্রান্ত হওয়া। জননযন্ত্রে নানান ব্যকটেরিয়ার জীবাণু দূষণের জন্য ইহা হইতে পারে।
iii) গর্ভস্রাব বা প্রসবের পর : জরায়ু দূষিত হইলে।
iv) পরিষ্কার পরিছন্নতার ও উপযুক্ত পরিবেশের : অভাব ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাব ইহার প্রধান কারণ।
v) রোগ আক্রমনে : দেহে বা জরায়ুতে কোন পীড়ার বিদ্যমানতা, যথা-রক্তহীনতা, যক্ষ্মা, ক্রণিক নেফ্রাইটিস, ক্রণিক প্যাসিভ কনজেশসন প্রভৃতি।
vii) ঋতুকালে তলপেটে ঠাণ্ডা লাগানো বা অন্য কোন কারণে জননেন্দ্রিয়ের প্রদাহে।
viii) জরায়ু মুখে বা প্রসব পথে ক্যানসার। গর্মির ঘা, টিউমার বা অন্য কোন রোগ হওয়া।
ix) অজীর্ণ, আমাশয়, পুরাতন ম্যালেরিয়া জ্বর, কালাজ্বর, যক্ষ্মা প্রভৃতি পীড়ায় স্বাস্থ্যভঙ্গ হওয়া।
x) যোনি দ্বারে ক্ষুদ্র কৃমির উপদ্রবে।
xi) হস্তমৈথুন, অতিরিক্ত রতিক্রিয়া; পুনঃ পুনঃ গর্ভধারণ বা পুনঃ পুনঃ গর্ভস্রাব এর ফলে।xii) উত্তেজক কারণে : তরুণ যোনিপ্রদাহ, অতিরিক্ত রতিক্রিয়ায়, হস্তমৈথুনে ।xiii) ঠাণ্ডা আর্দ্র ঋতু, ঠাণ্ডা আর্দ্র গৃহে অথবা জলময় স্থানে বসবাস এর কারণে।xiv) সর্বদা উচ্চ ধরনের আমিষ খাদ্য গ্রহণ, যেমন, মাংস, ডিম্ব, গরম মশলা এবং সম্ভবস্থলে সুরা পান করিলে।
1. হরমোনজনিত কারণ (Hormonal imbalance):ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে যোনিপথের মিউকাস গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত তরল বেশি হয়।প্রেগন্যান্সি, পিউবার্টি বা ওভুলেশন পিরিয়ডে এই নিঃসরণ বেড়ে যেতে পারে।2. সংক্রমণ (Infection):Fungal (Candida albicans)ভ্যাজাইনাল পরিবেশে pH পরিবর্তন হলে ক্যান্ডিডা বেড়ে গিয়ে চুলকানিসহ সাদা ঘন স্রাব তৈরি করে।Bacterial vaginosisভালভা ও যোনিতে দুধের মত সাদা, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হয়।Trichomoniasis (Protozoa)সবুজ বা হলুদ রঙের ফেনাযুক্ত স্রাব হয়, যা চুলকানি ও জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে।3. ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ (Inflammation):সার্ভিক্স, ভ্যাজাইনা বা ইউরিনারি ট্র্যাক্টে প্রদাহ হলে লিউকোরিয়া হতে পারে।প্রদাহজনিতভাবে কোষ থেকে তরল নিঃসরণ বাড়ে।4. পেলভিক কনজেশন বা রক্তজমা (Pelvic congestion):পেলভিক অঞ্চলে রক্ত জমে থাকলে বা রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হলে নিঃসরণ বেড়ে যায়।সাধারণত অধিক যৌন উত্তেজনা বা দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে হতে পারে।5. টিউমার বা গ্রোথ:জরায়ু বা সার্ভিক্সে টিউমার বা পলিপ থাকলে তা থেকে স্রাব নিঃসরণ হতে পারে।6. স্নায়বিক দুর্বলতা ও মানসিক চাপ:মানসিক দুশ্চিন্তা বা ক্লান্তির ফলে নার্ভাস সিস্টেমের ভারসাম্যহীনতায় নিঃসরণ বেড়ে যেতে পারে।
ⅰ) জরায়ু হইতে অনিয়মিত ভাবে সাদা স্রাব বা ডিমের শ্বেতাংশের ন্যায় স্রাব বাহির হইতে থাকে।
ii) মাঝে মাঝে তাহার সঙ্গে লালচে স্রাব বা দুই এক ফোঁটা রক্ত বাহির হয়।
iii) Infection থাকিলে যোনির চুলকানি হয়।
iv) প্রস্রাব ঘন ঘন হয় এবং প্রস্রাবে জ্বালা থাকে। মূত্রনালীর উপদাহ সৃষ্টি হয়।
v) স্রাব সাধারণতঃ ঋতুর পূর্বে বা পরে প্রকাশ পায়।
vi) কোমরে বেদনা হয়। তলপেট ভারী হয়, রোগিনী ক্রমে ক্রমে দুর্বল হইয়া পড়ে।
vii) ক্ষুধামান্দ্য, কোষ্ঠকাঠিন্য, অম্ল, হৃদস্পন্দন প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়।
viii) মাথাধরা ও মাথাব্যথা থাকে।
ix) যোনি হইতে জাত শ্বেতপ্রদর ঝাঁঝাল বা হাজাকর হয় এবং স্থানে লাগে সেস্থানে হাজিয়া যায়।
x) স্রাব অস্বচ্ছ, কটু, যন্ত্রণাদায়ক হয়, যোনিমধ্যে উষ্ণতা এবং সংকোচনবোধ হয়।
1. দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ও দুর্বলতা2. রক্তশূন্যতা (Anemia)3. যৌন জীবনে অস্বস্তি ও অরুচি4. বন্ধ্যত্ব (Infertility)5. প্রজনন অঙ্গে স্থায়ী ক্ষতি6. জরায়ুর ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায় (বিশেষ করে যদি স্রাবে দুর্গন্ধ, রক্ত বা পুঁজ মিশ্রিত থাকে)7. মনঃসংযোগে সমস্যা ও মানসিক অবসাদ8. ত্বকে অ্যালার্জি বা চুলকানি9. ঘুমের সমস্যা ও মেজাজ খারাপ থাকা।
1. বন্ধ্যত্ব (Infertility):
দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা লিউকোরিয়া প্রজনন অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে।
2. জরায়ুর ক্যান্সার
যদি স্রাবে রক্ত, দুর্গন্ধ বা পুঁজ মিশ্রিত থাকে এবং দীর্ঘমেয়াদে থাকে, তবে জরায়ুর ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
3. প্রজনন অঙ্গের ক্ষতি:
অভ্যন্তরীণ অঙ্গে (যেমন জরায়ু, ডিম্বাশয়, ফলোপিয়ান টিউব) প্রদাহ বা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
4. দাম্পত্য জীবনে সমস্যা:
যোনিপথে দুর্গন্ধ ও অস্বস্তির কারণে দাম্পত্য সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হতে পারে।
5. মানসিক অবসাদ ও আত্মবিশ্বাসের অভাব:
দীর্ঘদিন স্রাব হওয়ার কারণে রোগিণী নিজেকে অস্বস্তিকর ও নোংরা ভাবতে শুরু করে, যা মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে।
6. গর্ভাবস্থায় জটিলতা:
গর্ভধারণকালীন লিউকোরিয়া থাকলে গর্ভপাত, প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারি, বা শিশুর ওপর সংক্রমণের প্রভাব পড়তে পারে।
7. সাধারণ দুর্বলতা ও কর্মক্ষমতা হ্রাস:
অতিরিক্ত স্রাবের ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, অমনোযোগিতা দেখা দেয়।
1. Routine Vaginal Swab Test:
যোনির স্রাবের নমুনা নিয়ে ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস (Candida), ট্রাইকোমোনাস ইত্যাদি আছে কি না দেখা হয়।
2. Culture & Sensitivity (C/S) of Vaginal Discharge:
জীবাণু শনাক্ত করে কোন অ্যান্টিবায়োটিক উপযুক্ত তা জানা যায়।
3. Wet Mount Microscopy:
Trichomonas vaginalis, Candida, Bacterial Vaginosis ইত্যাদি শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
4. Pap Smear (প্যাপ টেস্ট):
জরায়ুর মুখের কোষ পরীক্ষা করে cervical dysplasia বা ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ বোঝা যায়।
5. Pelvic Ultrasound (TVS/USG Lower Abdomen):
জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে সিস্ট, মায়োমা বা অন্য কোনো গাইনিক সমস্যার উপস্থিতি বোঝা যায়।
6. Urine Routine & Microscopy:
প্রস্রাবের সংক্রমণ (UTI) আছে কি না যাচাই করতে।
7. Blood Tests:
CBC (Complete Blood Count): অ্যানিমিয়া বা ইনফেকশন বোঝার জন্য
FBS/PPBS: ডায়াবেটিস আছে কি না দেখতে
ESR/CRP: শরীরে কোনো প্রদাহ আছে কি না
8. VDRL, HIV, HBsAg (if needed):
যৌনবাহিত রোগ সন্দেহ থাকলে করা যেতে পারে।
কি করিতে হইবে :
ⅰ) জরায়ুর পীড়ার জন্য হইলে নিয়মিত ডেটল জল বা সামান্য গরম করিয়া বা পটাশিয়াম পারামাঙ্গানেট জলে মিশাইয়া ডুস দ্বারা জরায়ু ধৌত করা উচিত।
ii) সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকিতে হইবে। প্রত্যহ ভালভাবে স্নান করা এবং উষ্ণ জলে যোনি ধৌত করা বিধেয়।
iii) বিশুদ্ধ বায়ু, সেবন ও মুক্ত বায়ুতে ভ্রমন হিতকর।viii) তরুণ আক্রমণে শয্যায় বিশ্রাম গ্রহণ এবং অধিক বেদনায় কোমরে ও তলপেটে সেঁক প্রদান হিতকর।
কি করিতে হইবে না :
iv) স্বামী সহবাস বর্জন করিতে হইবে।vii) ঠাণ্ডা লাগানো, আর্দ্র স্যাঁতস্যাতে স্থানে বসবাস নিষিদ্ধ।
খাদ্য বর্জনীয় :
v) সর্বপ্রকার উত্তেজক আহার, মাংস, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, ঝাল এবং গরম মসলা পরিত্যাজ্য।
খাদ্য গ্রহণীয় :
vi) পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা কর্তব্য। কারণ ধাতুগত রোগ ও ধাতুগত দৌর্বল্য ইহার অন্যতম কারণ।
রোগের লক্ষণ, রোগীর ব্যক্তিগত লক্ষণ বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক লক্ষণ এবং ওষুধের লক্ষণ সম্মিলিত করে লক্ষণ সমষ্টি নির্ণয় করে নিম্নলিখিত ওষুধ সমূহ হইতে একটিমাত্র হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রয়োগ করিতে হইবে।
একোনাইট, ইস্কুলাস, এলুমিনা, এন্ড্রাগ্রিসিয়া, এমনমিউর, এরেলিয়া রেসিমোসা, আর্সেনিক, জনোশিয়া অশোকা, ব্যারাইটা কার্ব, বোরাক্স, ক্যালকেরিয়া কার্ব, চায়না, কোনায়াম, কষ্টিকাম, গ্রাফাইটিস, হেলোনিয়াস, হাইড্রাস্টিস, পালসেটিলা, এসিড নাইট্রিক, সিপিয়া, ক্রিয়োজোট, লিলিয়াম টিগ, নেট্রাম মিউর, কেলি আয়োড, সালফার প্রভৃতি।
স্রাবের রঙ, গন্ধ, পরিমাণ ও স্থায়িত্ব।
চুলকানি, জ্বালাপোড়া, ব্যথা বা অস্বস্তি আছে কি না।
মাসিকের ধরন ও যেকোনো অনিয়ম।
যৌন জীবন, গর্ভধারণ ইতিহাস।
সাম্প্রতিক কোনো গাইনোকোলজিক সার্জারি বা ইনফেকশন।
যোনিপথ পরিদর্শন (Vaginal examination)।
জরায়ুর অবস্থান, আকার ও কোনো অস্বাভাবিকতা।
Vaginal swab test: সংক্রমণ আছে কি না তা চেক করতে।
Wet mount microscopy: ট্রাইকোমোনাস, ইস্ট ফাঙ্গাস বা ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস চিহ্নিত করতে।
pH Test: যোনিপথের অম্লতা পরিমাপ করতে।
Culture and sensitivity: জীবাণুর ধরন ও উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক নির্ধারণে।
Pap smear test: জরায়ুর মুখের কোষে কোনো অসঙ্গতি আছে কি না।
Pelvic ultrasound: জরায়ু, ডিম্বাশয় বা অন্যান্য পাথলজির উপস্থিতি যাচাই করতে।
প্রুরিটাস ভালভা ( Pruritus Vulvae) বলতে সহজভাবে বুঝায় স্ত্রীযোনিতে চুলকানি । ভালভায় মহিলাদের বাহ্যিক যৌনাঙ্গ থাকে, যার মধ্যে রয়েছে ল্যাবিয়া, ভগাঙ্কুর, বার্থোলিন গ্রন্থি এবং যোনির ঠিক বাইরের ত্বক।
নারীদের বাহ্য স্ত্রী অঙ্গসমূহকে একত্রে ভালভা (Vulva) বলা হয়। এর অধীনে নিচের অঙ্গগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে:
১. মঁস্ পিউবিস (Mons pubis):
যৌনাঙ্গের উপরের দিকে কোমল চর্বিযুক্ত উঁচু অংশ, যেখানে বয়ঃসন্ধির পর লোম গজায়।
2. ল্যাবিয়া মেজোরা (Labia majora):
বাইরের দুইটি বড় ঠোঁটের মতো গঠন, যোনিপথকে ঢেকে রাখে এবং রক্ষা করে।
3. ল্যাবিয়া মাইনোরা (Labia minora):
ল্যাবিয়া মেজোরার ভিতরে ছোট ঠোঁটের মতো গঠন, যা যোনিপথ ও ইউরেথ্রাল ওপেনিং ঘিরে থাকে।
4. ক্লাইটোরিস (Clitoris):
একটি ছোট, সংবেদনশীল অঙ্গ যা যৌন উত্তেজনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
5. ইউরেথ্রাল ওপেনিং (Urethral opening):
প্রস্রাব নির্গমনের পথ, যোনিপথের ঠিক উপরে থাকে।
6. ভ্যাজিনাল ওপেনিং (Vaginal opening):
যোনিপথের প্রবেশদ্বার, মাসিক স্রাব, সহবাস এবং সন্তান প্রসবের পথ।
7. হাইমেন (Hymen):
যোনিপথের প্রবেশমুখে পাতলা পর্দা, যা জন্মগতভাবে ভিন্ন ভিন্ন রকমের হয় এবং সব নারীর ক্ষেত্রে একরকম থাকে না।
8. ব্যারথোলিন গ্রন্থি (Bartholin's glands):
যোনিপথের পাশে দুটি ছোট গ্রন্থি যা তরল নিঃসরণ করে যোনি আর্দ্র রাখে।
প্রুরাইটিস ভালভা (Pruritus Vulvae) হলো নারীদের গোপনাঙ্গে চুলকানির একটি উপসর্গ, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। নিচে এর কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো:
1. সংক্রমণ (Infections):
ইস্ট ইনফেকশন (Candida albicans)
ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস
ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজিনালিস (Trichomoniasis)
জেনিটাল হার্পিস বা ওয়ার্টস
2. অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া বা সংবেদনশীলতা (Allergic reactions):
সাবান, পারফিউম, ডিটারজেন্ট, স্যানিটারি প্যাড
সিন্থেটিক আন্ডারওয়্যার
3. হরমোনের পরিবর্তন:রজোনিবৃতি (Menopause)-এর সময় এস্ট্রোজেন হ্রাসপ্রেগনেন্সি বা পিরিয়ড সংক্রান্ত পরিবর্তন
4. ডার্মাটোলজিক অবস্থা:একজিমা, সোরিয়াসিসলাইকেন স্ক্লেরোসিস (Lichen sclerosus)
5. ডায়াবেটিস মেলিটাস:
উচ্চ রক্তে চিনি সংক্রমণ প্রবণতা বাড়ায়
6. ক্যানসার বা প্রিক্যানসারাস অবস্থাঃ
ভালভার ক্যানসার (বিশেষত বয়স্ক নারীদের মধ্যে)
VIN (Vulvar Intraepithelial Neoplasia)
7. হেলমিনথিক ইনফেকশন (যেমন পিনওয়ার্ম):
বিশেষ করে ছোট মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
ⅰ) যোনি পথের দূষিত স্রাব-ট্রাইকোমোনাস ও মনিলিয়া জীবাণু সংক্রামণ ইহার প্রধান কারণ।
ii) দেহে লৌহ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ ও বি, প্রোটিন প্রভৃতির অভাব।
iii) ক্লোরাম ফেনিকল ও টেট্রাসাইক্লিন ক্যাপসুল ব্যবহারের কুফল।
iv) অপরিচ্ছন্নতার কারণে ঐ সকল স্থানে উকুন জন্মানো বা মলদ্বার হইতে ছোট কৃমি যোনি মধ্যে প্রবিষ্ট হওয়া।
v) শ্বেতপ্রদর, জরায়ুর স্বাভাবিক স্থানবিচ্যুতি, জরায়ুর ক্যান্সার, জরায়ু গ্রীবার প্রদাহ প্রভৃতি কারণে।
vi) বহুমূত্ররোগে প্রস্রাব যোনিপথে লাগিয়া থাকিলে।
vii) মানসিক ও যৌন অশান্তির কারণে।
viii) ভালভার চর্মপীড়া-টিনিয়া, স্ক্যাবিস, হারপিস, কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস, সোরিয়াসিস প্রভৃতি।
ix) গর্ভ নিরোধক জেলি, ট্যাবলেট, ক্যাপ ও ডুস ব্যবহারের ফলে।।
x) গণোরিয়া, সিফিলিস প্রভৃতি যৌন পীড়া।
xi) শ্বেত প্রদর বা লিউকোরিয়ার কারণে।
xii) দাদ, একজিমা ও এলার্জিক ডারমাটাইটিস।
xiii) জীবাণুনাশক ঔষধের অপব্যবহারের ফলে।
xiv) এট্রোপিক সিনাইল ভালভো ভ্যাজাইনাইটিস রোগ থাকিলে।
1. ত্বকের জ্বালাময় প্রতিক্রিয়া (Inflammatory response):যেকোনো ইনফেকশন, অ্যালার্জি বা রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শে ভাজাইনা ও ভালভার চামড়ায় প্রদাহ সৃষ্টি হয়।এতে হিস্টামিন ও অন্যান্য কেমিক্যাল মিডিয়েটর নিঃসরণ হয়, যা চুলকানির অনুভূতি সৃষ্টি করে।2. সংবেদনশীল নার্ভ এন্ডিংস উত্তেজিত হয়:ভালভার চামড়ার নিচে থাকা নার্ভ এন্ডিংস ইনফ্লেমেশনের কারণে অতিসংবেদনশীল হয়ে ওঠে, ফলে সামান্য উত্তেজনাতেও চুলকানি হয়।3. ত্বকের ব্যারিয়ার ভেঙে যায় (Barrier disruption):অতিরিক্ত চুলকানি বা ক্ষরণ ত্বকের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা নষ্ট করে দেয়, ফলে নতুন সংক্রমণ বা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয়।4. হরমোনের প্রভাব:ইস্ট্রোজেনের ঘাটতির কারণে (যেমন মেনোপজে) ভ্যাজিনাল এপিথেলিয়াম পাতলা ও শুকনো হয়ে যায়, ফলে চুলকানির ঝুঁকি বাড়ে।5. অটোইমিউন বা ডার্মাটোলজিক অবস্থাসমূহ:যেমন lichen sclerosus বা eczema-তে ত্বকের কোষে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হয়, যা চুলকানির জন্য দায়ী।6. মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব:দীর্ঘমেয়াদি চুলকানি মানসিক চাপ তৈরি করে এবং মানসিক চাপ আবার চুলকানিকে বাড়িয়ে তোলে—একটি চক্র তৈরি হয় (itch-scratch cycle)।
1. তীব্র চুলকানি (Severe itching):
বিশেষ করে রাতে বা গোপনাঙ্গে গরম লাগলে চুলকানি বাড়ে।
চুলকানির কারণে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে।
প্রস্রাবের সময় বা পরবর্তীতে জ্বালাপোড়া হতে পারে।
দীর্ঘদিন চুলকালে ত্বক পাতলা বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
অতিরিক্ত চুলকানোর ফলে চামড়ায় আঁচড়ের দাগ বা ক্ষত হয়।
সংক্রমণজনিত কারণে সাদা, হলুদ বা সবুজ রঙের দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী চুলকানির ফলে ত্বক মোটা ও কালচে হতে পারে (lichenification)।
বা,কখনও যৌনমিলনের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়।
1. চামড়ার ক্ষত ও সংক্রমণ (Secondary infection):
অতিরিক্ত চুলকানোর ফলে ত্বকে ফাটা বা ক্ষত হয়, যার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ঢুকে যেতে পারে।
2. ত্বকের ঘনত্ব ও কালচে দাগ (Lichenification & hyperpigmentation):
দীর্ঘস্থায়ী চুলকানির কারণে ত্বক মোটা ও কালচে হয়ে যেতে পারে।
3. যৌন জীবনে সমস্যা (Sexual dysfunction):
চুলকানি, জ্বালা বা ব্যথার কারণে যৌন মিলনে ব্যথা হয়, ফলে মানসিক ও দাম্পত্য সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
4. ঘন ঘন রিকরেন্ট ইনফেকশন:
বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা ঘন ঘন ইনফেকশনে ভুগতে পারেন।
5. ঘুমের ব্যাঘাত ও মানসিক অশান্তি:
তীব্র চুলকানি রাতে বেড়ে যায়, যার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে ও মানসিক চাপ বাড়ে।
6. স্কিন ক্যানসারের সম্ভাবনা (In rare cases):
দীর্ঘমেয়াদি অজানা কারণে চুলকানি লুকিয়ে থাকা প্রিক্যানসারাস অবস্থার ইঙ্গিত দিতে পারে (যেমন: VIN বা Vulvar Intraepithelial Neoplasia)।
1. সঠিক চিকিৎসায় সম্পূর্ণ সুস্থতা সম্ভব:
যদি কারণ চিহ্নিত করে দ্রুত ও যথাযথ চিকিৎসা করা হয়, তবে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
2. দীর্ঘস্থায়ী বা পুনরাবৃত্ত চুলকানি:যেসব ক্ষেত্রে কারণ অনির্ধারিত বা চিকিৎসা অসম্পূর্ণ থাকে, সেখানে দীর্ঘমেয়াদি চুলকানি সমস্যা দেখা দিতে পারে।3. ত্বকের স্থায়ী পরিবর্তন:বারবার চুলকানোর ফলে ত্বকে স্থায়ী দাগ, মোটা ভাব, বা রঙের পরিবর্তন হতে পারে।4. মানসিক প্রভাব:ক্রনিক চুলকানির ফলে হতাশা, লজ্জা, আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া ইত্যাদি মানসিক সমস্যা হতে পারে।5. যৌনজীবনে সমস্যা:দীর্ঘমেয়াদি অস্বস্তি বা ব্যথা যৌন জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে, যা দাম্পত্য সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে।6. ভুল চিকিৎসায় জটিলতা:অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড ব্যবহারে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
1. হাই ভ্যাজিনাল সোয়াব (High Vaginal Swab):সংক্রমণ (Bacterial, Fungal বা Parasitic) শনাক্ত করতে ব্যবহার হয়।2. Microscopy, Culture & Sensitivity (M/C/S):স্রাবের নমুনা থেকে জীবাণু নির্ধারণ ও কোন অ্যান্টিবায়োটিকে সংবেদনশীল তা জানতে।3. Urine Routine Examination:প্রস্রাবে সংক্রমণ আছে কিনা তা যাচাই করার জন্য।4. Blood Sugar (FBS, PPBS, HbA1c):ডায়াবেটিস আছে কিনা দেখতে, কারণ এটি চুলকানির একটি সাধারণ কারণ।5. Vaginal pH Test:ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের ইঙ্গিত দিতে পারে।6. Pap Smear Test:জরায়ুমুখের কোষে কোনো ক্যানসারাস বা প্রিক্যানসারাস পরিবর্তন আছে কি না তা জানার জন্য।7. Skin Biopsy (প্রয়োজনে):যদি দীর্ঘমেয়াদী চুলকানি থাকে এবং ক্যানসার বা চর্মরোগ সন্দেহ হয়।8. STI Screening (যৌনবাহিত রোগের পরীক্ষা):যেমন HIV, HSV, Syphilis, Gonorrhea, Chlamydia ইত্যাদি।9. Thyroid Function Test (T3, T4, TSH):হরমোন জনিত কারণে চুলকানি হচ্ছে কিনা তা বোঝার জন্য।
প্রুরাইটিস ভালভা (Pruritus Vulvae) বা যোনির চুলকানি একটি অস্বস্তিকর অবস্থা, যা নানা কারণে হতে পারে—যেমন সংক্রমণ, অ্যালার্জি, চর্মরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি।
1. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা:
2. সুতির নিচের পোশাক পরা:
3. চুলকানির মূল কারণ শনাক্ত করা:
4.চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ব্যবহার:
5. প্রসবকালে বা মাসিক চলাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
1. হার্ড সাবান বা পারফিউমযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যাবে না।
2. চুলকানির স্থানে নখ দিয়ে ঘষা বা খোঁচানো ঠিক নয়।
3. ভেজা বা ঘামযুক্ত অন্তর্বাস পরে থাকা যাবে না।
4. যৌন সঙ্গমে ব্যথা বা চুলকানি থাকলে চিকিৎসা ছাড়া চালিয়ে যাওয়া উচিত নয়।
5. নিজে নিজে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার (ডিহাইড্রেশন রোধে)
টকদই/দই (Probiotics): শরীরের উপকারী ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে
সবজি ও ফলমূল (বিশেষ করে আঁশযুক্ত খাবার)
আদা, রসুন, হলুদ: প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক
ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রিত শর্করা গ্রহণ
অতিরিক্ত মিষ্টি, চিনি ও চকোলেট (ইস্ট সংক্রমণ বাড়ায়)
মসলাযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার
ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (যদি অসহ্যতা থাকে)
প্রসেসড বা প্যাকেটজাত খাবার।
রোগের লক্ষণ, রোগীর ব্যক্তিগত লক্ষণ বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক লক্ষণ এবং ওষুধের লক্ষণ সম্মিলিত করে লক্ষণ সমষ্টি নির্ণয় করে নিম্নলিখিত ওষুধ সমূহ হইতে একটিমাত্র হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রয়োগ করিতে হইবে।
প্রুরাইটিস ভালভার (Pruritus Vulvae) রোগ নির্ণয় বা ডায়াগনোসিস লিখ।
উওর :
প্রুরাইটিস ভালভা (Pruritus Vulvae) বা যোনির বাহ্য অঙ্গে চুলকানির সঠিক রোগ নির্ণয় (Diagnosis) করতে হলে একটি পদ্ধতিগত মূল্যায়ন প্রয়োজন, যাতে কারণ নির্ধারণ করে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করা যায়।
নিচে প্রুরাইটিস ভালভার রোগ নির্ণয়ের ধাপসমূহ দেওয়া হলো:
১. রোগীর ইতিহাস গ্রহণ (History Taking):
চুলকানির সময়কাল, তীব্রতা ও প্রকৃতি (স্থায়ী না অস্থায়ী)
রাতে বা দিনে বেশি হয় কি না
স্রাব, দুর্গন্ধ বা জ্বালাপোড়া আছে কি না
মাসিক চক্র, যৌন আচরণ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ইতিহাস
ব্যবহৃত সাবান, ডিটারজেন্ট, স্যানিটারি ন্যাপকিনে অ্যালার্জি
ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সমস্যা বা অন্য চর্মরোগের ইতিহাস
২. শারীরিক পরীক্ষা (Physical Examination):
বাহ্যিক যোনি (Vulva) ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল পরীক্ষা
চুলকানির স্থান লাল, ফুলে যাওয়া, ঘা, ফুসকুড়ি বা চামড়া পাতলা হয়ে যাওয়া আছে কি না
স্রাবের রং, গন্ধ ও ধরন পর্যবেক্ষণ
৩. ল্যাবরেটরি পরীক্ষা (Investigations):
Vaginal swab microscopy – ফাঙ্গাস, ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া (Trichomonas) চিহ্নিত করতে।
KOH preparation – Candida সংক্রমণ নির্ণয়ে।
Wet mount test – জীবাণু পর্যবেক্ষণ করতে।
Urine test – ইউরিনারি ইনফেকশন আছে কি না।
Blood sugar test – ডায়াবেটিস আছে কি না।
Allergy patch test – অ্যালার্জির উৎস চিহ্নিত করতে।
Pap smear test – জরায়ু মুখের কোষের অস্বাভাবিকতা খুঁজতে।
৪. প্রয়োজন অনুসারে:
Biopsy (চামড়ার টুকরো পরীক্ষার জন্য): যদি দীর্ঘমেয়াদি বা অপ্রতিকার্য চুলকানি থাকে এবং ক্যান্সার বা স্কিন ডিসঅর্ডারের সন্দেহ থাকে।
STD test: যৌনবাহিত রোগ আছে কি না তা নিশ্চিত করতে।
প্রুরাইটিস ভালভার কারণ অনেক হতে পারে—সংক্রমণ, অ্যালার্জি, হরমোনাল সমস্যা, চর্মরোগ বা ক্যান্সারও। তাই রোগ নির্ণয়ে ধৈর্য ও বিশদ পর্যবেক্ষণ দরকার।
আমাদের লেখার কোন অংশ রেফারেন্স ছাড়া কপি বা শেয়ার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ।
Make a comments as guest/by name or from your facebook:
Make a comment by facebook: