এচিনেসিয়া (Achenacea Angustifolia) পার্ট # ২, হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ক্রিয়া, উপযোগিতা বিস্তারিত

এচিনেসিয়া (Achenacea Angustifolia)

এচিনেসিয়া ঔষধটি লক্ষণসর্বস্ব।  
এই ওষুধের ভিতর ব্যক্তি কেন্দ্রিক অর্থাৎ ধাতু গত কোন লক্ষণ নেই,  সুতরাং ইহা একটি লক্ষণ সর্বোচ্চ ওষুধ। 


প্রস্তুতপ্রণালী- 
আমেরিকা ও মধ্য ইউরোপে উৎপন্ন ব্ল‍্যাক স্যাম্পসন নামক এক প্রকার গাছ হইতে মূল অরিট প্রস্তুত হয়।

ফলপ্রসু :
রক্তদুষ্টির বা রক্তের বিষক্রিয়া (Blood toxination) কারণে যে রোগগুলি হয় সে সব রোগে ঔষধটি ফলপ্রসু।
This remedy corrects the blood dyscrasias; hence it is useful in all types of blood poisoning.

নোট:
"সেপসিস অর্থাৎ রক্তদুষ্টি জীবন বিপন্নকারী অসুখ৷ তবে এই অসুখটিকে সহজে ধরা যায়না৷ গবেষণাগারে, ৪৮ ঘন্টা লেগে যায় রক্তদুষ্টির জীবাণুগুলিকে শনাক্ত করতে৷ গবেষকরা রক্তের দূষণ দ্রুত শনাক্ত করতে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন এখন৷

প্রায় ৩০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ৭ রকমের ছত্রাক '"সেপসিস বা রক্তদূষণ " ঘটাতে পারে৷

জীবন বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন দ্রুত শনাক্তকরণ

রক্তদুষ্টিকে বলা হয় সেপসিস৷ এই রোগে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক কিংবা এসব থেকে নির্গত বিষাক্ত পদার্থ রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়ে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আক্রমণ করার চেষ্টা করে৷ সাধারণত শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ শক্তি রক্তদূষণকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে৷ শুরুতে ধরা পড়লে রক্তদুষ্টিকে আয়ত্তে আনা সহজ৷ তা না হলে পরিণতি হতে পারে মারাত্মক৷ শরীরের কোনো জায়গা কেটে বা পুড়ে গেলে কিংবা অপারেশনের ক্ষত দিয়ে অথবা নাকে, মুখে নল লাগালেও প্রবেশ করতে পারে জীবাণু৷ জ্বর, গায়ে ব্যথা, দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস, হার্ট বিট বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি রক্তদুষ্টির লক্ষণ৷




ক্রিয়া- 
রক্ত, 
রক্ত সঞ্চালন, 
মাড়ি, 
লসিকা গ্রন্থি ও 
শরীর এর বামদিকে ইহার ক্রিয়া দৃষ্ট হয়।

কাতরতা :

নিদারুণ দুর্বলতা ও শীতার্ততা ইহার প্রধান লক্ষণ।

চরিত্রগত লক্ষণ-

১) রক্ত দুষ্টি ও রক্ত বিষাক্ততার লক্ষণ।

২) ক্ষতে ভীষণ দুর্গন্ধ। আবার কোন কোন স্থলে বিষাক্ত ক্ষতে দুর্গন্ধের অভাব।

৩) সর্বাঙ্গে ব্যথা বেদনা, অতিশয় দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ।

৪) পাকস্থলী ও হৃৎপিণ্ডে দুর্বলতাবোধ।

৫) গা বমি বমি ও শীত শীত বোধ।

৬) তন্দ্রালুতা।

৭) জ্বরে অনিয়মিত শীত, উত্তাপ ও ঘর্ম।

উপযোগীতা- 
এই ঔষধটি বাহ্যিক এবং আভ্যন্তরিক উভয় ভাবে ব্যবহার করা চলে। 

পুঁজ (Pus) রক্তের সহিত মিশ্রিত হইয়া রক্ত বিষাক্ত হইয়া ------
সেপটিক জ্বর এবং সৃতিকা, 
লোকিয়া স্রাব অবরুদ্ধ হেতু জ্বর,
পুনঃ পুনঃ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দুষ্ট ব্রণ ও ফোঁড়া হয়।
টাইফয়েড, 
বিসর্প শয্যাক্ষত, 
পঁচাক্ষত (গ্যাংরীন)
ভ্যাক্সিনোসিস, 
ডিপথিরিয়া, 
ইরিসিপেলাস, 
পাইমিয়া, 
সেপটিসিমিয়া । 
এপেন্ডিসাইটিস, 
কার্বংকল, 
বিষাক্ত ফোঁড়া,
পুঁজপ্রবণ ক্ষত,
সেরিব্রো স্পাইন্যাল, 
মেনিনজাইটিস, 
পতঙ্গ কিংবা বিষাক্ত জীব জন্তুর দংশন, (সর্পাঘাতে ইহা  খুব ফলপ্রদ।)
বিষাক্ত উদ্ভিদ দ্বারা বিষাক্ত হওয়া 
প্রভৃতিতে এচিনেসিয়া অত্যন্ত উপযোগী।

ইহার সমস্ত আস্রাব, ( যেমন মল, মূত্র, প্রসবাস্তিক স্রাব, নিঃশ্বাস )  প্রভৃতি সবই দুর্গন্ধযুক্ত (পাইরোজেন, সৌরিনাম, ব্যাপটিসিয়া, এসিড কার্বল, এনথ্রাস)।
 
*** টাইফয়েড জ্বরের সহিত প্রবল উদরাময়ে,
*** টীকা দেওয়ার দোষে নানা প্রকার উপসর্গে
***¡সাংঘাতিক প্রকারের ডিপথিরিয়াতেও ইহা ব্যবহৃত হয়। 

***পারদ ও উপদংশজনিত চর্মপীড়া, 
***খোস-পাঁচড়া,
*** চুলকানী প্রভৃতির ইহা উৎকৃষ্ট ঔষধ।

 এক প্রকার বিষাক্ত বড় স্ফোটক (পাইমিরা এবসস) যাহা একই সময়ে শরীরের অনেক স্থানে হয়, এচিনেসিয়া ব্যবহারে এত বেশী উপকার পাওয়া যায় যে, অস্ত্র চিকিৎসার আর প্রয়োজন হয় না।

 ***পুনঃ পুনঃ ফোঁড়া হওয়া, 
****টিবিয়ার পুরাতন ক্ষত এবং 
****অন্যান্য পীড়ায়ও ইহা ফলপ্রদ ঔষধ।



-- ডাঃ কাজী সাইফ উদ্দীন আহমেদ
বি এস সি(বায়োকেমিস্ট্রি), ঢা.বি, 
ডি এইচ এম এস (বোর্ড স্ট্যান্ড), ঢাকা    
প্রভাষক, 
ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ। 



আমাদের লেখার কোন অংশ রেফারেন্স ছাড়া কপি বা শেয়ার সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ। 
>Share by:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন


Make a comments as guest/by name or from your facebook:


Make a comment by facebook:
নবীনতর পূর্বতন