থাইরয়েড ডিসঅর্ডার কি?
থাইরয়েড ডিসঅর্ডার হলো থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার ব্যাঘাত, যা থাইরয়েড হরমোন উৎপাদন, নিয়ন্ত্রণ এবং তার প্রভাবকে প্রভাবিত করে।
থাইরয়েড হরমোন হলো প্রধানত
থাইরক্সিন (T4) এবংট্রায়োডোথাইরোনিন (T3),
যা দেহের বিপাক, বৃদ্ধি, বিকাশ এবং শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপে ভূমিকা রাখে।
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের আবিষ্কার :
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের প্রথম দিকের লক্ষণগুলোর বর্ণনা প্রাচীন চিকিৎসা গ্রন্থে পাওয়া যায়। আধুনিক যুগে ১৯শ শতকের মাঝামাঝি থাইরয়েড হরমোনের গুরুত্ব এবং কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। ডঃ এডওয়ার্ড স্টোনার ১৯১৪ সালে থাইরয়েড হরমোনের রাসায়নিক গঠন আবিষ্কার করেন এবং এরপর থেকে থাইরয়েড ডিসঅর্ডার নিয়ে ব্যাপক গবেষণা শুরু হয়।
অন্যান্য নাম
হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism):থাইরয়েড গ্রন্থির কম কার্যকারিতা, যা থাইরয়েড হরমোনের অভাব ঘটায়।
হাইপারথাইরয়েডিজম (Hyperthyroidism):থাইরয়েড গ্রন্থির অতিরিক্ত কার্যকারিতা, যা থাইরয়েড হরমোনের বৃদ্ধি ঘটায়।
গয়টার (Goiter):থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।
থাইরয়েডিটিস (Thyroiditis):থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ।
হাশিমোটো'স থাইরয়ডিটিস: দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাইরয়েড গ্রন্থিকে আক্রমণ করে, যার ফলে হরমোন উৎপাদন কমে যায়।
গ্রেভস' ডিজিজ: এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাইরয়েড গ্রন্থিকে অত্যধিক সক্রিয় করে।
2. আয়োডিনের অভাব বা আধিক্য:
আয়োডিন থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য। এর অভাব হলে হরমোনের উৎপাদন কমে যায়, আর অতিরিক্ত হলে হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায়।
3. জন্মগত সমস্যা:
কিছু মানুষ জন্ম থেকেই থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয়।
4. থাইরয়েড নোডিউলস:
থাইরয়েড গ্রন্থিতে গুটি তৈরি হতে পারে, যা কখনও কখনও ক্যানসারে পরিণত হতে পারে।
5. হরমোনের অস্বাভাবিকতা:
অন্য হরমোনের অভাব বা অস্বাভাবিকতা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
6. স্ট্রেস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন থাইরয়েডের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
প্রকারভেদ :
1. হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism):
থাইরয়েড গ্রন্থির কম কার্যকারিতা, যা থাইরয়েড হরমোনের অভাব ঘটায়।
লক্ষণ: ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, শুষ্ক ত্বক, চুল পড়া, ঠান্ডা অনুভব করা, অবসাদ, এবং ডিপ্রেশন।
চিকিৎসা: সাধারণত সিনথেটিক থাইরয়েড হরমোনের (লেভোথাইরক্সিন) মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
2. হাইপারথাইরয়েডিজম (Hyperthyroidism):
থাইরয়েড গ্রন্থির অতিরিক্ত কার্যকারিতা, যা থাইরয়েড হরমোনের বৃদ্ধি ঘটায়।
লক্ষণ: ওজন কমা, উদ্বেগ, দ্রুত হৃদস্পন্দন, অতিরিক্ত ঘাম, এবং ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া।
চিকিৎসা: এন্টি-থাইরয়েড ওষুধ, রেডিওএকটিভ আয়োডিন, অথবা থাইরয়েড গ্রন্থির সার্জারি।
3. গয়টার (Goiter):
থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।
লক্ষণ: গলার সামনে স্ফীতি, শ্বাসকষ্ট, এবং গ swallowing কষ্ট।
চিকিৎসা: কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা, যেমন আয়োডিনের ঘাটতি হলে আয়োডিন সম্পূরক।
4. থাইরয়েডিটিস (Thyroiditis):
থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ।
লক্ষণ: গলার ব্যথা, হরমোনের ওঠানামা।
চিকিৎসা: প্রদাহ কমানোর জন্য ওষুধ ও থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা।
5. থাইরয়েড নোডিউলস:
লক্ষণ: সাধারণত উপসর্গ নেই, তবে কিছু ক্ষেত্রে গলার চাপ বা অসুবিধা।
চিকিৎসা: পর্যবেক্ষণ, জরুরি হলে সার্জারি।
লক্ষণাবলী
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের লক্ষণ ব্যক্তির বয়স, লিঙ্গ, এবং রোগের প্রকারভেদ অনুসারে ভিন্ন হতে পারে। এখানে কিছু বিস্তারিত লক্ষণ উল্লেখ করা হলো:
১. হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism):
থাইরয়েড গ্রন্থির কম কার্যকারিতা, যা থাইরয়েড হরমোনের অভাব ঘটায়।
হাইপোথাইরয়েডিজম হল একটি হরমোনজনিত সমস্যা, যেখানে থাইরয়েড গ্রন্থি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে পারে না।
হরমোনের ঘাটতির কারণে শরীরের কার্যকারিতা ধীরগতিতে চলে এবং অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
শারীরিক লক্ষণ:
ক্লান্তি ও অবসাদ: শরীরের শক্তি কমে যাওয়া।ওজন বৃদ্ধি: বিপাক ক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, ফলে ওজন বৃদ্ধি।শুষ্ক ত্বক ও চুল: ত্বক এবং চুল শুষ্ক হয়ে পড়ে।মাংসপেশির দুর্বলতা: সাধারণ কাজেও ক্লান্তি অনুভূতি।
মানসিক লক্ষণ:
হতাশা ও বিষণ্ণতা: মানসিক অবস্থার অবনতি।মনোযোগের অভাব: চিন্তা করার ক্ষমতার হ্রাস।
২. হাইপারথাইরয়েডিজম (Hyperthyroidism):
থাইরয়েড গ্রন্থির অতিরিক্ত কার্যকারিতা, যা থাইরয়েড হরমোনের বৃদ্ধি ঘটায়।
শারীরিক লক্ষণ:
দ্রুত হৃদস্পন্দন (ট্যাকিকার্ডিয়া): হার্ট রেট বৃদ্ধি।উদ্বেগ ও অস্থিরতা: মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি।ওজন হ্রাস: বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি পাওয়ায় ওজন কমে যেতে পারে।
অন্যান্য লক্ষণ:
অতিরিক্ত ঘাম: স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘাম হওয়া।ঘুমের সমস্যা: নিদ্রাহীনতা এবং বিশ্রামহীনতা।
৩. গয়টার (Goiter):
থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।
গলার সামনে স্ফীতি: থাইরয়েড গ্রন্থির আকার বৃদ্ধি, যা গলার স্ফীতি সৃষ্টি করে।শ্বাসকষ্ট: গলার স্ফীতি শ্বাস নিতে অসুবিধা করতে পারে।
৪. থাইরয়েডিটিস (Thyroiditis):
থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ।
গলার ব্যথা বা চাপ: প্রদাহজনিত কারণে ব্যথা অনুভূতি।হরমোনের ওঠানামা: কখনও হাইপোথাইরয়েডিজম এবং কখনও হাইপারথাইরয়েডিজমের লক্ষণ দেখা যেতে পারে।
ইনভেস্টিগেশন (তদন্ত পদ্ধতি)
থাইরয়েড ডিসঅর্ডার নির্ণয়ের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রয়োজন হয়:
1. থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট:
TSH (Thyroid Stimulating Hormone):
এটি প্রধান পরীক্ষার একটি, যা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা নির্ধারণ করে। সাধারণত, TSH এর উচ্চ মাত্রা হাইপোথাইরয়েডিজম নির্দেশ করে এবং নিম্ন মাত্রা হাইপারথাইরয়েডিজম নির্দেশ করে।
Free T4 এবং Free T3:
এই হরমোনের মাত্রা নির্ধারণ করে, যা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা ও স্বাস্থ্য জানায়।
2. এন্টিবডি টেস্ট:
Anti-TPO (Thyroid Peroxidase Antibody):
অটোইমিউন ডিজঅর্ডার যেমন হাশিমোটো'স থাইরয়ডিটিস শনাক্ত করতে সহায়ক।
TSI (Thyroid Stimulating Immunoglobulin):
গ্রেভস' ডিজিজের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
3. থাইরয়েড স্ক্যান:
রেডিওএকটিভ আয়োডিন স্ক্যান:
থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।
4. এলট্রাসনোগ্রাফি:
থাইরয়েড গ্রন্থির গঠন ও আকার নির্ধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়।
5. বায়োপসি:
থাইরয়েড নোডিউলসের ক্ষেত্রে, ক্যানসারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বায়োপসি করা হতে পারে।
জটিলতা
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা না করা হলে এটি বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে:
1. হাইপোথাইরয়েডিজম:
কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা: হৃদরোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।ডিপ্রেশন: মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।ফার্টিলিটি সমস্যা: প্রজনন সক্ষমতার অবনতি।
2. হাইপারথাইরয়েডিজম:
হার্ট ফেইলিউর: দীর্ঘমেয়াদী হার্টের সমস্যা।অস্টিওপোরোসিস: হাড়ের দুর্বলতা, যা হাড়ের ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বাড়ায়।থাইরয়েড স্টর্ম: এটি একটি মারাত্মক অবস্থা, যেখানে থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটে।
ভাবিফল (দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব)
থাইরয়েড ডিসঅর্ডার দীর্ঘমেয়াদে কিছু সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে:
দেহের বিপাকের পরিবর্তন: শরীরের শক্তি এবং ওজনের ভারসাম্যহীনতা।মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: উদ্বেগ, হতাশা, এবং মনোযোগের অভাব।হরমোনাল সমস্যা: নারীদের পিরিয়ডের অস্বাভাবিকতা বা বন্ধ্যত্ব।
প্রতিরোধ :
থাইরয়েড ডিসঅর্ডার প্রতিরোধের জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
1. আয়োডিনের প্রয়োজনীয়তা: খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত আয়োডিন থাকতে হবে।2. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: পুষ্টিকর খাদ্য যেমন ফল, সবজি, শস্য, এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা।3. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন এবং যোগব্যায়াম।4. নিয়মিত মেডিকেল পরীক্ষা: থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা করানো এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসা গ্রহণ করা।
ঘোরোয়া চিকিৎসা
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের জন্য কিছু ঘোরোয়া চিকিৎসা এবং প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে:
1. যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন: মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।2. পুষ্টিকর খাবার: অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন বেরি, শাকসবজি, এবং বাদাম খাওয়া।3. আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার: যেমন নোনা মাছ, সি-ভেজিটেবল এবং আয়োডিন সমৃদ্ধ লবণ।4. জলপাই তেল: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে জলপাই তেল থাইরয়েডের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।5. বায়োমডুলেটরি থেরাপি: এটি একটি বিকল্প চিকিৎসা যা ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করতে সাহায্য করতে পারে।
ব্যবস্থাপনা
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের ব্যবস্থাপনার মূল অংশগুলো নিম্নরূপ:
1. নিয়মিত ডাক্তারী পরীক্ষা:
থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট (TSH, Free T4, Free T3) দ্বারা নিয়মিত হরমোন স্তরের পর্যবেক্ষণ করা।
চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা।
2. চিকিৎসা:
হাইপোথাইরয়েডিজম: লেভোথাইরক্সিন (Levothyroxine) সাধারণত ব্যবহৃত হয়।
হাইপারথাইরয়েডিজম: অ্যান্টিথাইরয়েড ড্রাগস (যেমন মেথিমাজোল), রেডিওঅ্যাকটিভ আয়োডিন, অথবা থাইরয়েড সার্জারি।
3. লাইফস্টাইল পরিবর্তন:
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, এবং মানসিক চাপ কমাতে মনোযোগ দেওয়া।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন :
ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত পরিস্থিতিতে নজর রাখা উচিত:
শারীরিক লক্ষণ: ক্লান্তি, অবসাদ, অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস, ত্বক ও চুলের সমস্যা।মাসিক চক্রের সমস্যা: অনিয়মিত পিরিয়ড বা বন্ধ্যত্ব।গলার স্ফীতি: গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থির স্ফীতি দেখা দিলে।হৃদস্পন্দনের পরিবর্তন: দ্রুত হার্টবিট বা অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন।
৷
কি খাওয়া যাবে :
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কিছু খাবারের তালিকা:
হাইপোথাইরয়েডিজমের জন্য:
আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার: নোনা মাছ, সি-ভেজিটেবল।শাকসবজি: পালং শাক, গাজর, ব্রকলি।ফল: বেরি, আপেল, কমলা।প্রোটিন: ডাল, মুরগি, ডিম।
হাইপারথাইরয়েডিজমের জন্য:
শীতল ফল ও শাকসবজি: যেমন শসা, কাকরোল।প্রোটিন: বাদাম, সয়াবিন।গ্রেইনস: কুইনোয়া, ব্রাউন রাইস।
কি খাওয়া যাবেনা :
হাইপোথাইরয়েডিজম:
গোইট্রোজেনিক খাবার: কোলার, ব্রকলি, কাবজি—যা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত করতে পারে।প্রক্রিয়াজাত খাবার: উচ্চ চিনির খাদ্য ও ট্রান্সফ্যাট।
হাইপারথাইরয়েডিজম:
ক্যাফিন: কফি, চা, সোডা, এবং এনার্জি ড্রিঙ্ক।অতিরিক্ত আয়োডিন: যেমন আয়োডিন লবণ বা আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের জন্য একটি বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিছু সাধারণ হোমিওপ্যাথিক ওষুধ:
1. Thyroidinum:
থাইরয়েডের সমস্যাগুলির জন্য উপকারী।
2. Calcarea Carbonica:
হাইপোথাইরয়েডিজমের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
3. Iodium:
আয়োডিনের অভাবের জন্য ব্যবহৃত হয়।
হোমিওপ্যাথিক বিভিন্ন দার্শনিক এবং ডাক্তারদের মতামত
হোমিওপ্যাথির অনেক দার্শনিক এবং ডাক্তার থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের চিকিৎসায় তাদের মতামত প্রদান করেছেন:
1. ড. হ্যানিম্যান: তিনি বিশ্বাস করতেন যে রোগের মূল কারণ বুঝে চিকিৎসা করা উচিত। থাইরয়েডের সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
2. ড. হ্যানিম্যানের অনুসারীরা: তারা বলেন যে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও মানসিক অবস্থার উপরও প্রভাব ফেলে।
3. বিভিন্ন হোমিওপ্যাথিক গবেষণায়: দেখা গেছে যে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের লক্ষণ এবং রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সক্ষম।
উপসংহার
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের সঠিক ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা, এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তারি পরামর্শ ও নিয়মিত পরীক্ষা ছাড়া সঠিক চিকিৎসা সম্ভব নয়। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণ করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। রোগীর লক্ষণ বুঝে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রেখে এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করে এই সমস্যাগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
----কাজী সাইফ উদদীন আহমেদ।
>Share by:
Make a comments as guest/by name or from your facebook:
Make a comment by facebook: