ইসলামিক শরীয়াহ অনুযায়ী, বাচ্চা কনসিভ করার আগে এবং পরে কিছু সুপারিশ রয়েছে যা আল-কোরআন এবং হাদিসে উল্লেখিত। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা দেওয়া হলো:
বাচ্চা কনসিভের আগে করণীয় বিষয়সমূহ:
1. নেক নিয়ত করা: সন্তান কনসিভের আগে স্বামী-স্ত্রীর উদ্দেশ্য হওয়া উচিত একটি নেক এবং সৎ সন্তান লাভ করা, যে আল্লাহর আনুগত্য করবে। এই উদ্দেশ্য সহ অন্তর থেকে দোয়া করা উচিত।
2. দোয়া পড়া: সহবাসের আগে এই দোয়া পড়া সুন্নাহ:
> "বিসমিল্লাহ, আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতান, ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাযাকতানা।"
যার অর্থ: "আল্লাহর নামে, হে আল্লাহ, আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখুন এবং আমাদের যে সন্তান দান করবেন তাকেও শয়তান থেকে রক্ষা করুন।"
(বুখারী ৩২৭১, মুসলিম ১৪৩৪)
3. দেহ ও মনের পবিত্রতা বজায় রাখা: শারীরিক ও মানসিক পবিত্রতা ইসলামিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সন্তান কনসিভের আগে নিয়মিত নামাজ, ইবাদত এবং পরিশুদ্ধ চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে অন্তর পরিষ্কার রাখা জরুরি।
4. পুষ্টিকর খাবার খাওয়া: শরীরের সুস্থতা এবং সন্তান ধারণের উপযোগী পুষ্টি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ফল, সবজি, এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা।
কনসিভের পরে করণীয় বিষয়সমূহ:
1. আল্লাহর ওপর ভরসা ও দোয়া: গর্ভাবস্থায় নিয়মিত আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকা। সুরা মারইয়াম, সুরা আল-ইমরান সুরা আল কোরআন থেকে ইত্যাদি পাঠ করা সুন্নাহ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।
2. গর্ভাবস্থার সঠিক যত্ন নেওয়া: গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক শারীরিক কাজকর্মের পাশাপাশি অতিরিক্ত পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকা এবং ভালো খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।
3. আখলাক শেখানো: গর্ভাবস্থায়ও মা-বাবা উভয়ের সুন্দর আখলাক বজায় রাখা উচিত, কারন এর প্রভাব ভবিষ্যৎ সন্তানের ওপর পড়ে।
4. হালাল ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ: শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে হালাল এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। শিশুর জন্যও মায়ের খাদ্যভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ।
5. তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর নির্ভরশীলতা): গর্ভাবস্থায় মা-বাবা উভয়েরই আল্লাহর ওপর পূর্ণ নির্ভরশীল হওয়া উচিত। সন্তান সুস্থ ও নেক হওয়ার জন্য সর্বদা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা উচিত।
এই সুপারিশগুলো আল-কোরআন এবং সুন্নাহ থেকে প্রাপ্ত এবং ইসলামের আলোকে সন্তান ধারণ এবং প্রসবকালীন সময়ে মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতির জন্য সহায়ক।
পৃথিবীতে সুস্থ বাচচা পেতে হলে বাবা মায়ের বয়স কত হওয়া উচিত :
সুস্থ সন্তান ধারণের জন্য বাবা-মায়ের বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো "আদর্শ" বয়স নেই, তবে কিছু বৈজ্ঞানিক ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত দিক বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞরা সাধারণত সুপারিশ করে যে:
মা’র জন্য:
1. প্রাইম বয়স: সাধারণভাবে, ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সকে মহিলাদের সন্তান ধারণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত এবং স্বাস্থ্যকর সময় হিসেবে ধরা হয়। এই বয়সে মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতা সর্বোচ্চ থাকে এবং গর্ভাবস্থায় জটিলতার ঝুঁকি কম থাকে।
2. ৩৫ বছরের পর ঝুঁকি বাড়ে: ৩৫ বছরের পর মহিলাদের সন্তান ধারণের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে, এবং বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটি, গর্ভপাত, এবং গর্ভাবস্থার জটিলতার ঝুঁকি কিছুটা বেড়ে যায়। একে "অ্যাডভান্সড ম্যাটার্নাল এজ" বলা হয়, যার ফলে সন্তান জন্মের সময় ডাউন সিনড্রোমের মতো ক্রোমোজোমাল সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
বাবা’র জন্য:
1. সেরা প্রজনন ক্ষমতা: পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রজনন ক্ষমতা মহিলাদের মতো দ্রুত কমে না, তবে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সকে সাধারণভাবে সন্তানের জন্য উপযুক্ত সময় বলে ধরা হয়। পুরুষের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে শুক্রাণুর গুণগত মান কমে যেতে পারে এবং এর ফলে সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে পারে।
2. ৪০ বছরের পর: ৪০ বছরের পর পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গুণগত মানে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়, যা শিশুদের অটিজম এবং অন্যান্য বিকাশজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে, পুরুষদের ক্ষেত্রে সন্তান ধারণের ক্ষমতা মহিলাদের তুলনায় দীর্ঘ সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
আদর্শ সময় বিবেচনা:
সামাজিক ও মানসিক প্রস্তুতি: বয়স ছাড়াও বাবা-মায়ের মানসিক ও সামাজিক প্রস্তুতিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা মানসিকভাবে প্রস্তুত কিনা এবং সন্তানের জন্য সঠিক পারিবারিক পরিবেশ তৈরি করতে পারবে কি না, সেটাও বিবেচ্য।
স্বাস্থ্য এবং লাইফস্টাইল: বয়সের পাশাপাশি বাবা-মায়ের শারীরিক সুস্থতা, পুষ্টি, এবং জীবনযাপনের ধরনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সর্বোপরি, মা-বাবার শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি, সুস্থতা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সহায়ক।
বাচ্চা কনসিভ করার আগে এবং পরে করনিয় বিষয়সমূহ এবং চিকিৎসা - হোমিওপ্যাথি অনুযায়ী :
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি একটি সমন্বিত এবং নিরাপদ চিকিৎসা পদ্ধতি, যা সাধারণত গর্ভাবস্থায় এবং বাচ্চা কনসিভ করার পূর্বে বিশেষভাবে কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। এটি মূলত প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি হওয়া ওষুধ দ্বারা শরীরের নিজস্ব নিরাময় ক্ষমতা জাগিয়ে তোলে। হোমিওপ্যাথি শরীরের সার্বিক অবস্থা এবং ব্যক্তির মানসিক, শারীরিক ও আবেগীয় অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করে।
বাচ্চা কনসিভ করার আগে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা:
1. কনস্টিটিউশনাল চিকিৎসা: হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় প্রতিটি ব্যক্তির শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে কনস্টিটিউশনাল রেমেডি প্রদান করা হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তির আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক গঠন, এবং মানসিক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। সাধারণত কনসিভ করার আগে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য এবং শরীরকে প্রস্তুত করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ:
পুলসাটিলা: এটি ব্যবহৃত হয় মহিলাদের জন্য, যাদের মাসিক অনিয়মিত বা দেরিতে হয়। এটি শরীরের হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
সেপিয়া: এটি মহিলাদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর যারা মানসিক বিষণ্ণতায় ভুগছেন, বিশেষ করে যারা গর্ভধারণের আগে হরমোনজনিত সমস্যা, ক্লান্তি এবং মানসিক চাপের শিকার হন।
ক্যালকারিয়া কার্ব: এটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে কার্যকর।
2. হরমোনের ভারসাম্য:
গর্ভধারণের আগে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা হলে কনসিভ করতে সমস্যা হতে পারে। হোমিওপ্যাথিতে মাসিক চক্র নিয়মিতকরণের জন্য বিশেষ ওষুধ আছে যা হরমোনের ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। এর মধ্যে কিছু ওষুধ হলো:
লাইকোপোডিয়াম: এটি সাধারণত ব্যবহার করা হয় হরমোন জনিত সমস্যা দূর করার জন্য এবং হজমের সমস্যা ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য।
ন্যাট্রাম মিউর: এটি মানসিক চাপ দূর করতে এবং শারীরিক শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
3. ফলিক অ্যাসিড এবং পুষ্টি সংক্রান্ত ওষুধ: ফলিক অ্যাসিড, আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি থাকলে গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে। হোমিওপ্যাথিক ওষুধ শরীরের পুষ্টিগত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কার্যকর।
বাচ্চা কনসিভ করার পর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা:
1. গর্ভাবস্থার সাধারণ সমস্যা:
বমি বা বমি ভাব: গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে বমি বা বমি ভাবের জন্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেমন:
Ipecac: গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি ভাব এবং বমির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
ন্যাক্স ভমিকা: এটি বমি ভাব এবং হজমের সমস্যার জন্য ব্যবহার করা হয়।
2. গর্ভাবস্থার মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ দূর করার জন্য হোমিওপ্যাথি খুব কার্যকর। এটি গর্ভবতী নারীদের মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আর্সেনিকাম অ্যালবাম: এটি উদ্বেগ এবং ভয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।
Ignatia: মানসিক চাপ এবং বিষণ্ণতা দূর করতে সাহায্য করে।
3. শরীরের শক্তি বৃদ্ধি এবং হাড়ের উন্নয়ন:
ক্যালকারিয়া ফস: এটি গর্ভাবস্থায় শিশুর হাড় এবং দাঁতের গঠন ও বিকাশের জন্য উপকারী।
ক্যালকারিয়া কার্ব: এটি গর্ভবতী মহিলার শরীরকে শক্তিশালী করে এবং ক্লান্তি কমায়।
4. গর্ভাবস্থার ক্লান্তি এবং পুষ্টিগত ঘাটতি:
ফেরাম ফস: রক্তাল্পতা এবং ক্লান্তি কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
সালফার: এটি মায়ের পুষ্টি নিশ্চিত করতে এবং শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখতে সহায়ক।
হোমিওপ্যাথির বিশেষত্ব:
নিরাপদ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন: হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সাধারণত প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি এবং খুবই মৃদু হয়, তাই এটি গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ।
ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিকিৎসা: প্রতিটি রোগীকে আলাদা করে দেখা হয় এবং তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে ওষুধ নির্বাচন করা হয়।
সার্বিক সুপারিশ:
গর্ভধারণের আগে এবং পরে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণের জন্য অবশ্যই একজন প্রশিক্ষিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বাচ্চা কনসিভ করার আগে এবং পরে করনীয় বিষয়সমূহ এবং হোমিওপ্যাথিক, এলোপ্যাথি আয়ুর্বেদী অনুযায়ী চিকিৎসা :
বাচ্চা কনসিভ করার আগে এবং পরে এলোপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক, এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে কিছু সুপারিশ রয়েছে। প্রতিটি পদ্ধতিই ভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে কাজ করে। নিচে এই তিনটি পদ্ধতির সুপারিশ দেয়া হলো:
এলোপ্যাথি অনুযায়ী:
কনসিভের আগে:
1. প্রি-কনসেপশন চেকআপ: বাচ্চা কনসিভ করার আগে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত। হরমোন, থাইরয়েড, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিতে হবে।
2. ফলিক অ্যাসিড: কনসিভের ৩ মাস আগে থেকে প্রতিদিন ফলিক অ্যাসিড (০.৪-০.৮ মিগ্রা) সাপ্লিমেন্ট নেওয়া জরুরি, যা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ঠিক রাখে এবং জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করে।
3. হেলথি লাইফস্টাইল: ধূমপান, মদ্যপান, এবং অনিয়ন্ত্রিত ওজন কমানোর ডায়েট থেকে বিরত থাকা জরুরি।
কনসিভের পরে:
1. প্রসিদ্ধ টেস্ট: নিয়মিত প্রসিদ্ধ আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষাগুলো করানো জরুরি।
2. সঠিক পুষ্টি: প্রোটিন, ভিটামিন, এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। এছাড়া ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, এবং ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খাওয়া প্রয়োজন।
3. ভ্যাকসিন: গর্ভাবস্থায় কিছু বিশেষ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, যেমন ফ্লু শট এবং টিটেনাস।
আয়ুর্বেদিক অনুযায়ী:
কনসিভের আগে:
1. শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্য: আয়ুর্বেদে সুস্থ শারীরিক ও মানসিক অবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সন্তান কনসিভের আগে শরীর থেকে টক্সিন দূর করার জন্য "পঞ্চকর্মা" থেরাপি করতে বলা হয়।
2. পুষ্টিকর খাবার: এ সময়ে পুষ্টিকর এবং সহজপাচ্য খাবার খেতে বলা হয়। যেমন, ঘি, শাকসবজি, বাদাম, ফলমূল ইত্যাদি।
3. যোগব্যায়াম: প্রি-কনসেপশন সময়কালে যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশন মানসিক শান্তি ও শারীরিক স্থিতি বজায় রাখতে সহায়ক।
কনসিভের পরে:
1. পুষ্টিকর ডায়েট: আয়ুর্বেদিক ডায়েটে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, শাকসবজি, গোটা শস্য, এবং ঘি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া "সাত্ত্বিক" খাবার গ্রহণ করতে বলা হয়, যা মস্তিষ্ক এবং শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
2. হালকা ব্যায়াম এবং যোগ: গর্ভাবস্থায় হালকা যোগব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করতে বলা হয়।
3. বাল কানথি: এটি একটি বিশেষ আয়ুর্বেদিক টনিক যা গর্ভবতী মহিলাদের সঠিক পুষ্টি সরবরাহ করে।
হোমিওপ্যাথিক অনুযায়ী:
কনসিভের আগে:
1. সুস্থতা নিশ্চিত করা: বাচ্চা কনসিভের আগে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে পরামর্শ করে ব্যক্তিগত শারীরিক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। যেমন, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা মানসিক চাপ।
2. কনস্টিটিউশনাল রেমেডি: হোমিওপ্যাথিতে ব্যক্তির কনস্টিটিউশন বা শারীরিক ও মানসিক অবস্থা অনুযায়ী ওষুধ দেওয়া হয়, যেমন সেপিয়া, পুলসাটিলা, ন্যাট্রাম মিউর ইত্যাদি।
কনসিভের পরে:
1. প্রসারিত রেমেডি: গর্ভাবস্থায় হোমিওপ্যাথিক ওষুধগুলো নিরাপদ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম থাকে। তবে শুধুমাত্র প্রশিক্ষিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
2. পালসেটিলা, ক্যালকারিয়া ফস: পালসেটিলা সাধারণত মানসিক এবং শারীরিক পরিবর্তনের জন্য প্রয়োগ করা হয়, আর ক্যালকারিয়া ফস হাড়ের গঠন ও বিকাশের জন্য সাহায্য করে।
3. গর্ভাবস্থার উপসর্গ: বমি, ক্লান্তি, এবং উদ্বেগের মতো গর্ভাবস্থার সাধারণ উপসর্গগুলির জন্যও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে, যেমন Ipecac, সেপিয়া, Nux Vom ...
সার্বিকভাবে: প্রতিটি চিকিৎসা পদ্ধতির নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে।
তবে, গর্ভাবস্থায় চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নেওয়ার আগে একজন চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের (যিনি সকল পদ্ধতি বিষয় ভাল জানেন) তার পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কাজী সাইফ উদদীন আহমেদ ।
>Share by:
Make a comments as guest/by name or from your facebook:
Make a comment by facebook: